Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে হত্যার নির্দেশ দেন ওসি’

Still-INNERপাইকগাছায় কাশেম বাহিনীর কথিত সদস্যদের আটকের পর এলাকাবাসীকে গণপিটুনি দিয়ে তাদের মেরে ফেলার নির্দেশ দেন ওসি শিকদার আক্কাস আলী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে শিকদার আলী আক্কাস দাবি করেছেন তিনি এমন কথা বলেননি।

এদিকে ‘বন্দুকযুদ্ধে ১৩ বনদস্যু’ নিহতের ঘটনায় পাইকগাছাসহ খুলনাবাসীর মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রথম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুইজন নিহত হয় রবিবার ভোর ৪টায়। পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান তখন বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে ২জন নিহত হয়েছে এবং ১১ বনদস্যুকে আটক করা হয়েছে।’

chardike-ad

ওই সময় পাইকগাছা থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) শিকদার আক্কাস আলী মোবাইলে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ব্যস্ত আছি। আটকদের এলাকাবাসী গণপিটুনি দিচ্ছে। তাই আরও মারা যেতে পারে।’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করেন যে, কথিত বনদস্যুদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ওসি শিকদার আক্কাস আলী। কিন্তু এলাকাবাসীর অনেকেই রাজি হননি। পরে বেলা ১২টার দিকে আহতদের চিকিৎসা না দিয়ে ওই দুটি লাশ সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনে অভিযানে যায় পুলিশ।

এরপর পাইকগাছায় আসেন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, জেলা প্রশাসক আনিস মাহমুদ, ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ মনিরুজ্জামান। রবিবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরই ১৩টি মৃতদেহ একটি ট্রলারে স্তূপ করে নিয়ে আসা হয়। বিবস্ত্র অবস্থায় লাশ ট্রলার থেকে নসিমনে উঠানোর দৃশ্যও হৃদয়বিদারক।

এ সময় পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র প্রদর্শনকালে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, কাশেম বাহিনীর অত্যাচারে দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছার সাধারণ মানুষ জর্জরিত।

তবে তিনি স্বীকার করেন নিহত ১৩জনের নামে পাইকগাছা থানায় কোনো মামলা নেই। আর ডিআইজি মনিরুজ্জামান জানান, নিহত ১৩জন আসামির নামে বর্তমানে ৫টি করে মামলা হবে। এর আগে বন্দুযুদ্ধে নিহতদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আসামিদের নামে মামলার একটা লম্বা তালিকা থাকে। কিন্তু এবারই প্রথম বলা হল, নিহতদের নামে মামলা করা হবে।

এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স,ম বাবর আলী বলেন, ‘লাশগুলো টেনে হেঁচড়ে যেভাবে নসিমনে তোলা হয়েছে তা সত্যিই অমানবিক।’ তিনি নিহতদের সম্পর্কে কিছু জানেন না বলেও জানান।

স ম বাবর আলী আরও বলেন, নিহতদের ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। নিহতদের একজন পাইকগাছার, ২জন কয়রা, আর ১০ জন ডুমুরিয়ার। বনদস্যুদের উৎপাত বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বেআইনিভাবে কিছু করাকেও আমি সমর্থন করি না।

ডুমুরিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান খান আলী মুনছুর জানান, নিহত সবাইকেই তিনি চেনেন না। তবে ২জনকে ডাকাত হিসাবে চেনেন। বাকিদের তিনি চেনেন না বা তাদের নামে কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। তিনি বলেন, ১৩জন মানুষকে ক্রসফায়ারে দেবার আগে তাদের আরও ভাল করে যাচাই করা উচিত ছিল।

ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিকদার আক্কাস আলী সোমবার সকালে দ্য রিপোর্টকে বলেন, আমি বনদস্যুদের গণপিটুনি দিতে বলিনি। যারা এ কথা বলছে, তারা মিথ্যা বলছে।

তিনি আরও বলেন, বনদসুদের লাশ নিতে আজও (সোমবার) কেউ আসেনি। লাশগুলো খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

শিকদার আক্কাস আলী আরও বলেন, ‘কাশেম বাহিনীর সদস্যদের আমরা অনেকদিন ধরে খুঁজছি। এই ১৩জনের মধ্যে কাশেম না থাকলেও তাকে এখন গ্রেফতার করা সহজ হবে।’ খবর-দ্য রিপোর্ট।