Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামছে জামায়াত-শিবির

jamatরাজনৈতিক অঙ্গনে সরকার-জামায়াত সমঝোতা বা গোপন আঁতাতের কথা চাউর হলেও দিন দিন সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছে জামায়াত-শিবির। এতে যেকোনো সময় তারা আবারও সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামতে পারে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

জামায়াত-শিবিরের কাছে আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দলের বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে বুধবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

chardike-ad

মাওলানা নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে দেশব্যাপী তিন দিনের হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াত।

দ্বিতীয় দফার হরতাল চলাকালেই রোববার জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দলটির হেভিয়েট নেতা মীর কাশেম আলীর বিরদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। এ রায়ের প্রতিবাদে জামায়াত বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী হরতাল পালন করবে।

মীর কাশেম আলীর রায় ঘোষণার তিন ঘণ্টার পরই আবার জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছে। সোমবার কামারুজ্জামানের রায় ঘোষণা করা হবে।

যেহেতু কামারুজ্জামানের রায় চূড়ান্ত তাই এটা নিয়ে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের মধ্যেও বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে একের পর এক ফাঁসি রায় ও কামারুজ্জামানের চূড়ান্ত রায় নিয়ে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা এখন সরকারের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। যেকোনো সময় তারা জ্বলে উঠতে পারে বলেও জামায়াত-শিবিরের একটি সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করে এক জামায়াত নেতা বলেন, সরকার আমাদের শরীরে ক্ষত সৃষ্টি করে এখন সেখানে লবণ ছিটানো শুরু করেছে। যন্ত্রণা যখন বেশি বেড়ে যাবে তখনতো বেঁচে থাকার জন্য আমাদের যা করা দরকার তাই করতে হবে।

ওই জামায়াত নেতা আরো বলেন, সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে একটা খেলা শুরু করেছে। আমাদের নিরপরাধ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক ফাঁসির রায় দেবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখবো তা আর হবে না। আব্দুল কাদের মোল্লার মতো কামারুজ্জামানের বিষয়েও যদি সরকার কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমাদের সর্বশক্তি নিয়েই মাঠে নামতে হবে। এছাড়া আমাদের সামনে ভিন্ন আর কোনো পথ খোলা নেই।

এদিকে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান।

এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, সরকার অন্যায়ভাবে নেতৃবৃন্দকে একের পর এক শাস্তি দিয়ে যাচ্ছে। শিবির কর্মীদের শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকতে নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে কোনো অন্যায় রায়ের বাস্তবায়ন আমরা করতে দেবো না।

তিনি বলেন, আমরা ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আরো দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। আন্দোলনকে তীব্র থেকে তীব্র করার মাধ্যমে নেতৃবৃন্দকে মুক্ত করে আনবো। সরকারের জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ও নেতৃবৃন্দকে হত্যার কোনো ষড়যন্ত্র আমরা বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবো না।

শিবির সেক্রেটারি আরো বলেন, সরকারের মানবতাবিরোধী বিচারের উদ্যোগ ও রায় এ সবকিছুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য করা হচ্ছে। বিশেষ করে সরকার জামায়াতে ইসলামীকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে প্রহসনের ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে।

যে আইন ও ট্রাইব্যুনালের রায়ের মধ্য দিয়ে তারা জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অপরাধী প্রমাণ করার চেষ্টা করছে দেশ বিদেশে ইতোমধ্যে সেই আইন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশের জনগণ ট্রাইব্যুনালের রায়কে নিরপেক্ষ মনে করে না। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য ট্রাইব্যুনাল সাজানো মামলা ও মিথ্যা সাক্ষ্যের ওপর ভর করে একের পর এক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে অন্যায় রায় দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এটিকে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য মনে করছি না।

এ বিষয়ে কথা বললে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ড. রেজাউল করিম বলেন, দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ এখন আর এ সরকারকে চায় না। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট আর সন্ত্রাসের কারণে যেকোনো সময় এ সরকারের পতন হবে। সরকার হত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে পতন ঠেকাতে পারবে না। আওয়ামী লীগের জেনে রাখা উচিত তাদের ষড়যন্ত্রের চেয়ে মানুষকে রক্ষাকারী আল্লাহর পরিকল্পনা অনেক বেশি মজবুত। এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র, এ জালিম সরকার অচিরেই জনগণের পাকড়াওয়ের শিকার হবে।

কামামরুজ্জামানের সাজা বহাল থাকলে প্রতিক্রিয়া কী হবে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আমরা আশা করছি কামারুজ্জামান উচ্চ আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস পাবেন। এগুলো হলো সরকারের সাজানো মামলা। সরকারের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

 

তথ্য সুত্রঃ শীর্ষ নিউজ ডটকম