Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পাকিস্তানের স্কুলে তালেবানের বর্বরতা : শত শিশুসহ নিহত ১৩০

pakistanপাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে বর্বরতা চালিয়েছে তালেবান সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার তাদের হামলায় ১০০ শিশুসহ ১৩০ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০ টায় তালেবান পেশোয়ার শহরের আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে ৫শ’র বেশি শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা ছিলেন।

পেশোয়ারের বার্সাক রোডের এ স্কুলটিতে ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুরা পড়াশুনা করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশব্যাপী এ ধরনের ১৪৬টি স্কুল পরিচালনা করে। স্কুলটিতে সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীরাও শিক্ষকতা করেন। ডন অনলাইন জানিয়েছে, সকালে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ৫-৬ জন বন্দুকধারী সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ‘আর্মি পাবলিক স্কুলে’ প্রবেশ করে এলোপাতড়ি গুলি চালায়।

chardike-ad

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৩০-এ পৌঁছেছে। পাখতুনখা প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী মোস্তাক ঘানি এএফপিকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। টিটিপির মুখপাত্র মোহাম্মদ খোরাসানি এ হামলাকে সম্প্রতি উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও তিনি বলেন, ‘বড় শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে শিশুদের নয়।’

ডন জানায়, স্কুলটিতে পরীক্ষা চলছিল। তালেবান জঙ্গিরা যখন হামলা চালায় তখন অধিকাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ব্যস্ত ছিল। স্কুলটির ল্যাবরেটরি সহকারী মুদসসর আব্বাস বলেন, ‘ঘটনার সময় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী একটি পার্টি উদযাপন করছিল। আমি নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরা ৬ থেকে ৭ জঙ্গিকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেখেছি। এরপর সেখানে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।’

সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রবেশের প্রায় আধা ঘণ্টা পরই সেখানে পাকিস্তানের সেনা সদস্যরা পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

দেশটির সেনা সদরদফতর জানায়, উদ্ধার অভিযান চলছে এবং অনেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা- কর্মচারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেনা সদস্যরা একটি করে ক্লাসে ঢুকছেন এবং সেখানে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করছেন।

সেনাবাহিনীর দাবি; প্রায় পাঁচ ঘণ্টা গোলাগুলির পর স্কুলের ৫০০ শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশকে তারা বের করে আনতে পেরেছে। গুলিতে ছয় জঙ্গি নিহত হয়েছে। হামলার সময় স্কুলে থাকা এক শিক্ষার্থী বলে, ‘ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসার সময় বন্ধু ও ক্লাসমেটদের মৃতদেহ করিডরে পড়ে থাকতে দেখেছি। তাদের শরীর থেকে রক্ত ঝড়ছিলো। তাদেরকে এমনকি ৩/৪ বার পর্যন্ত গুলি করা হয়েছে।’

এনডিটিভি জানায়, জঙ্গিরা স্কুলের একের পর এক শ্রেণীকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। স্কুলটির ভেতরে এখনো কতজন রয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।   পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তিনি এঘটনার নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার সর্বদলীয় সভা আহবান করেছেন নওয়াজ শরিফ। পাক সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্র নরেন্দ্র মোদি। তিনি এ ঘটনাকে কাপুরুষোচিত আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন। পকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড ওলসনও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।