Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিশ্বকাপের আগে জার্সি বিড়ম্বনা

musfiqবিশ্বকাপ সামনে রেখে ২৪ জানুয়ারি দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এর আগেই বুঝে পাওয়ার কথা ছিল প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দকৃত পাঁচ সেট করে জার্সি। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি, বিশ্বকাপের জন্য তৈরি এ জার্সির সবগুলো সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেননি মাশরাফি-মুশফিকরা। মাপ, রঙ ও বাজে ফ্যাব্রিকসের কারণে নিজেদের সঙ্গে মাত্র দুই সেট জার্সি রেখে বাকি জার্সি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেক্সওয়েভের কাছে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আজ (২৮ জানুয়ারি) বাকি জার্সি পৌঁছে দেয়ার ওয়াদা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

দেশ ছাড়ার আগে জাতীয় দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারই বিরক্ত ছিলেন এবারের জার্সি নিয়ে। নিজেদের মাপ আগে ভাগে পাঠিয়ে দেয়া হলেও সে অনুযায়ী জার্সি বুঝে পাননি ক্রিকেটাররা। জার্সি বরাদ্দের দায়িত্বে থাকা জাতীয় দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও গোপন করেননি তার অসন্তুষ্টির কথা। বলেছিলেন, ‘এবারের জার্সির মান নিয়ে ছেলেরা ভীষণ অসন্তুষ্ট। যদিও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেক্সওয়েভ প্রত্যেকের পাঁচ সেট জার্সিই সরবরাহ করেছিল। কিন্তু প্যাকেট খোলার পর দেখা গেল, জার্সির মান ভালো নয়। অন্তত বাংলাদেশের মতো দলের সঙ্গে এসব জার্সি একদমই মানানসই নয়। তবু কাজ চালানোর জন্য আপাতত দুই সেট করে রেখে বাকি তিন সেট আমি বাতিল করে দিয়েছি।’

chardike-ad

ত্রুটিপূর্ণ ওইসব জার্সি টেক্সওয়েভকে পাল্টে দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে সুজন আরো বলেন, ‘তাদের (টেক্সওয়েভ) বলা হয়েছে, যেন বাতিলগুলো পাল্টে ভালো মানের জার্সি দেয়া হয়। তারা এতে সম্মতও হয়েছে। তারা আমাকে ২৮ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ায় জার্সি পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’ এর নিশ্চয়তা দিয়ে গতকাল বণিক বার্তাকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আশিকুর রহমান তুহিন বলেন, ‘আসলে অল্প কিছু জার্সিতে ত্রুটি ধরা পড়েছিল। সেগুলো আমরা কালকের মধ্যেই (আজ) ক্রিকেটারদের হাতে পৌঁছে দেব। এবার মূল ম্যাচ, প্র্যাকটিস ম্যাচ, ট্রাকসুট সব মিলিয়ে ২০ রকমের জার্সি তৈরি করেছি, যার ১ হাজার পিস তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। এর মধ্যে ৭৪ পিস ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেগুলো কাল (আজ) পেয়ে যাবেন তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা জার্সি নিয়ে সন্তুষ্ট না হবেন, ততক্ষণ আমরা জার্সি সরবরাহ করে যাব।’

যদিও তাদের এমন কাজ কিন্তু নতুন নয়, প্রতিষ্ঠানটি টি২০ বিশ্বকাপের সময়ও একই রকম করেছিল জানিয়ে সদ্য ক্রিকেট অপারেশন্সের দায়িত্ব পাওয়া নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘ক্রিকেটাররা তাদের সঙ্গে জার্সি নিয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু দেখা গেছে সেগুলোর কারো মাপই ঠিক নেই। আবার কারো জার্সির কলারে সমস্যা। বিশ্বকাপের মতো আসরে খেলতে যাওয়ার আগে জার্সি নিয়ে এমন বিড়ম্বনা মোটেও প্রত্যাশিত নয়।’

একটা সময় ছিল, যখন বিদেশ সফরে যাওয়ার আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বলে দেয়া হতো, হাতব্যাগে যেন কিছুটা জায়গা খালি রাখা হয়। সেই খালি জায়গা পূরণ হতো ফ্লাইট ধরার ঠিক আগ মুহূর্তে। বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়া হতো জার্সি। সে সমস্যা শেষ হয়নি এখনো। অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের মাটিতে ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি ২২ জানুয়ারি শেষ হওয়ার পর দিন ছুটি দেয়া হয়েছিল ক্রিকেটারদের। কিন্তু ছুটির সে দিনটিতেও জার্সি নিতে ক্রিকেটারদের হাজির হতে হয়েছিল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। জার্সি হাতে পেয়ে ক্রিকেটারদের আনন্দ নিমেষেই উধাও হয়ে যায়। বেশির ভাগ জার্সিই মানসম্মত না হওয়ায় বরাদ্দের পুরো জার্সি সঙ্গে নেননি তারা। অনিচ্ছা সত্ত্ব্বেও ম্যানেজারের অনুরোধে দুই সেট করে জার্সি সঙ্গে নিয়েছেন বিশ্বকাপ সেনানীরা।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে দুর্জয় বলেন, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারের পাঁচ সেট করে জার্সি পাওয়ার কথা। কিন্তু আপাতত ওরা নিয়ে গেছে দুই সেট করে। আশ্চর্য হচ্ছি, যে সমস্যা আমাদের সবসময় ভুগিয়েছে, এখনকার ক্রিকেটারদেরও কেন তাতে ভুগতে হবে?’