Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

তারকাদের মধ্যে সর্বোচ্চ করদাতা মাহফুজ আহমেদ

দেশীয় চলচ্চিত্রের নায়ক-নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী সম্পদের মালিক চিত্রনায়িকা মৌসুমী। মৌসুমী বেশী সম্পদের মালিক হলেও সেরা করদাতার তালিকায় তার নাম নেই। বাঘা বাঘা সব নায়ককে টপকে সেরা করদাতার স্থান দখল করে রেখেছেন মাহফুজ আহমেদ। তারকাদের দাখিল করা ২০১৩-১৪ করবর্ষের আয়কর নথি পর্যালোচনা করে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে। এখানে উল্লেখ্য যে, করদাতার আয়কর নির্ধারিত হয় আয়ের ওপর, সম্পদের ওপর নয়। তাই মৌসুমী সবচেয়ে বেশী সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও সেরা করদাতার তালিকায় তার নাম নেই।

অপরদিকে কম সম্পদ নিয়েও সেরা করদাতা হয়েছেন মাহফুজ আহমেদ। আয়কর প্রদান প্রসঙ্গে মাহফুজ আহমেদ বলেন, ‘আমি আয়কর দেই এবং দিতে আনন্দ বোধ করি। আমি মনে করি, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সততার সাথে আয়কর দেওয়া উচিত। যারা কর ফাঁকি দেয় তারা আসলে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ ও দেশবিরোধী। এ দেশ, দেশের মানুষ আমাকে মাহফুজ আহমেদ বানিয়েছে। দেশের তো আমার কাছে পাওনা আছে। তাই আমি আয়কর দিয়েই আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।’ অন্যদিকে সর্বোচ্চ সম্পদের মালিক চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে না পাওয়া গেলেও তার স্বামী ওমর সানির সঙ্গে কথা হয়। এ সময়ের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে মৌmahfuz ahmedসুমী সবচেয়ে বেশী সম্পদের মালিক শুনে চমকে যান সানি। ওমর সানি বলেন, ‘আমার জানা মতে, চলচ্চিত্র জগতে মৌসুমীর চেয়েও অনেক বেশী সম্পদশালী ব্যক্তি আছেন। তাদের সম্পদের হিসাব কোথায়? আমার স্ত্রী কত সম্পদের মালিক আমার চেয়ে আর ভাল কারো জানার কথা নয়।’

chardike-ad

তারকাদের আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৩-১৪ করবর্ষে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার নিট সম্পদ নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছেন আরিফা পারভীন খান মৌসুমী (টিআইএন নম্বর- ৬৫৮৪৮৪৩৮২১৪৬)। ২ কোটি ৮ লাখ টাকার সম্পদ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মনির হোসেন খান (টিআইএন নম্বর- ৪৮৫৭৭৫৭৮৭৭৩৮)। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের একজন নিয়মিত সংবাদ পাঠিকা রেহনুমা কামাল আহম্মেদের সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার (টিআইএন নম্বর- ৮২৯৪৯১৬২১৭৪৬)। এরপরে যথাক্রমে রয়েছেন ফকরুল ইসলাম রানা (টিআইএন-৫৮১৮১২৩১৭১৭৪)। তার নিট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। মাসুদ পারভেজের (সোহেল রানা) সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকার (টিআইএন- ৮৮৭২০৩৮০৭৪৩৭)। ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে কণ্ঠশিল্পী শুভ্র দেবের (টিআইএন- ৬৩৩৩৮২৩২১৩৩৩)। তারপরেই রয়েছেন আরেক কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। তার সম্পদের মূল্য ৯৪ লাখ টাকা।

এ ছাড়া সর্বোচ্চ সম্পদশালীর মধ্যে আরও রয়েছেন আবুল বাশার মোল্লা (টিআইএন- ৪৪৯৪১১২২৫২৪৭), নিট সম্পদের পরিমাণ ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অভিনেত্রী আলেয়া ফেরদৌসী (টিআইএন- ৫৫২৮৬১৪৩৪৫৭০), নিট সম্পদের পরিমাণ ৯০ লাখ ৪ হাজার টাকা। কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ বেলী (টিআইএন- ৪৮৮০০৫৭৮২৭৪৩), নিট সম্পদের পরিমাণ ৮৮ লাখ ৩ হাজার টাকা। মাসুদা ইসলামের নিট সম্পদের পরিমাণ ৮৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। অভিনেত্রী তাহমিনা সুলতানা মৌর (টিআইএন- ৭৬০০৪৬৮৪৫৯৭১) নিট সম্পদের পরিমাণ ৭৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

২০১৩-১৪ করবর্ষে অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ তার রিটার্নে প্রদর্শিত আয় দেখিয়েছেন ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা (টিআইএন- ২৩৪০১৪৬৮২০৩১)। অর্থাৎ আলোচ্য পরিমাণ অর্থ তিনি ওই করবর্ষে আয় করেছেন। এর বিপরীতে তিনি কর দিয়েছেন ২০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন নাট্যাভিনেতা জাহিদ হাসান। ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে এর বিপরীতে আয়কর দিয়েছেন ১৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক সাকিব খান। যার পুরো নাম সাকিব খান রানা (টিআইএন-৫৬৪৪৮০৪৬২৬৭৭)। তিনি আলোচ্য করবর্ষে আয় করেছেন ৪০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এর বিপরীতে আয়কর দিয়েছেন ৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। অবশ্য ২০১২-১৩ করবর্ষে অডিটের পর ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় গোপনের সন্ধান পেয়েছে আয়কর বিভাগ। অর্থাৎ কর ফাঁকি দিতে সাকিব খান ওই পরিমাণ আয় গোপন করেছিলেন। এরপর ৪০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ (টিআইএন-৭৭২১৯৩৭৪৩০৮৩)। এর বিপরীতে তিনি আয়কর দিয়েছেন ৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। কাজী শারমিন নাহিদ (শাবনুর) আয় করেছেন ২৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এর বিপরীতে আয়কর দিয়েছেন ৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। তার টিআইএন নম্বর- ৭৬৬০৪৮৫২৬০৩০। এ ছাড়া চলচ্চিত্র পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম ২৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে এর বিপরীতে আয়কর দিয়েছেন ৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা। কণ্ঠশিল্পী এসডি রুবেল ১৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে আয়কর দিয়েছেন ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা। অভিনেতা বাবুল আহমেদ ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে আয়কর দিয়েছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর চেয়ারম্যান ও চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ১৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে আয়কর দিয়েছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি একজন সামান্য মানুষ। আমি যা আয় করি তার ওপর ভিত্তি করেই আয়কর দেই। আমি মনে করি, সবার ঠিকমতো আয় কর দেওয়া উচিত। আমরা সবাই যদি ঠিকমতো আমাদের আয়কর দেই, তাহলে সুন্দরভাবে এগিয়ে যাবে দেশ।’