Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভারতে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি বাহুবলী

baahubaliভারতে এ যাবৎকালের সবথেকে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র ‘বাহুবলী’ শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে। আড়াইশো থেকে তিনশো কোটি ভারতীয় টাকা খরচ হয়েছে এই ছবিটি তৈরি করতে।

দুবছর ধরে শুটিং করা মূল ছবিটি দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা তেলুগুতে, তবে এর একটি আলাদা তামিল সংস্করণ হয়েছে, আর ছবিটি ‘ডাব’ বা অনুবাদ করা হয়েছে মালয়ালম আর হিন্দিতেও।

chardike-ad

ভারতের প্রায় চার হাজার সিনেমা হলে একসঙ্গে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে আর শনিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০০ টি হলে ছবিটি দেখা যাবে।

প্রথম দিনেই ছবিটি দেখার জন্য এক একটি টিকিটের দাম কালোবাজারে প্রায় দশ হাজার টাকা উঠেছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাহুবলী চলচ্চিত্রটির একটা ট্রেলার মে মাসের শেষের দিকে বাজারে ছাড়ার পরেই ইউটিউব বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে কয়েক লাখ মানুষ সেটা দেখে নিয়েছেন। অবশ্য তার অনেক আগে – ২০১৩ সালে যখন তেলুগু সিনেমার প্রাণকেন্দ্র হায়দ্রাবাদে এই ছায়াছবির চলচ্চিত্রায়ন শুরু হয়, তখন থেকেই দর্শক আর চলচ্চিত্র মহলে আলোচনায় রয়েছে ‘বাহুবলী’।

এই ছায়াছবিটি পুরাণের একটি কাহিনীর সঙ্গে কাল্পনিক বিষয় মিশিয়ে তৈরি হয়েছে। ছবিটির পরিচালনা করেছেন এস এস রাজামৌলী, যিনি আগেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন তেলেগু সুপারস্টার প্রভাস আর রাণা দুগ্গুবাতী আর মূল নারী চরিত্রদুটিতে রয়েছেন তামান্না ভাটিয়া এবং আনুষ্কার শেট্টি।
ছবিটিতে গানই রয়েছে প্রায় ২৬ মিনিটের আর রয়েছে একটা যুদ্ধের দৃশ্য, যেটা ছবিটির প্রায় কুড়ি মিনিট জুড়ে দেখা যাবে। এই একটা যুদ্ধের দৃশ্য শুটিং করতেই পাঁচশোর বেশি টেকনিসিয়ান, দুই হাজার জুনিয়র আর্টিস্ট এবং হাতি, ঘোড়া অংশ নিয়েছে। প্রয়োজন হয়েছিল এক হাজার সৈনিকের পোশাক, ঢাল, তলোয়ার – এসব।

তবে ছবিটির মূল আকর্ষণ হচ্ছে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি কম্পিউটার জেনারেটেড গ্রাফিক্স আর ভিস্যুয়াল এফেক্ট – যেটা তৈরি করেছেন ভারত, চীন আর দক্ষিণ কোরিয়ার ১৭টি ভিস্যুয়াল এফেক্ট স্টুডিয়োর ৬০০ শিল্পী।

বাংলা চলচ্চিত্রশিল্পকে সম্প্রতি অতি সফল কিছু বাণিজ্যিক ছবি যিনি উপহার দিয়েছেন, সেই পরিচালক অনিকেত চ্যাটার্জী বলছিলেন, “দক্ষিণ ভারত, বিশেষ করে তেলেগু ছবির এগুলো একটা বিশেষত্ব। বিশাল পরিধি নিয়ে, প্রকান্ড সেট তৈরি করে প্রচুর গ্র্যাফিক্স আর ভিস্যুয়াল এফেক্টস দিয়ে ছবি তৈরি হয় ওখানে। ছবির বিষয়বস্তু দিয়ে হয়তো একটা পথের পাঁচালী তৈরি হয় আমাদের এখানে, কিন্তু এইরকম বিশালাকার ছবি তৈরি অসম্ভব।“

ছায়াছবিটি পুরাণের একটি কাহিনীর সঙ্গে কাল্পনিক বিষয় মিশিয়ে তৈরি হয়েছে। এক রাজাকে তাঁরই পার্ষদদের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হতে হয়। তাঁর ছেলেদের রাজ্যের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যারা বড় হয়ে ফিরে এসে যুদ্ধ করে নিজেদের রাজত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। অতি সাধারণ একটা গল্পকে বিশালাকার একটা ছায়াছবিতে প্রস্তুত করাটাই একটা প্রায় অসাধ্য সাধন।

বাহুবলী ছায়াছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যগুলোতে – বিশেষ করে অন্ধ্র প্রদেশ আর তেলেঙ্গানায় শুরু হয়েছে দর্শকদের পাগলামি। অগ্রিম টিকিট না পেয়ে ভাঙ্গচুর হয়েছে কয়েকটি সিনেমা হল। আবার কালোবাজারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রচুর দামে টিকিট বিক্রির অভিযোগে হায়দ্রাবাদের দুটি সিনেমাহল মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে – অভিযোগ কালোবাজারে একেকটা টিকিটের দাম চাওয়া হচ্ছে প্রায় দশ হাজার টাকা।

সূত্র : বিবিসি।