Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চীনা দ্বীপের কাছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, উত্তেজনা

china_seaদক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
চীন বলছে, তাদের এলাকায় মার্কিন নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজকে দেখার পর তারা ওই জাহাজটিকে সতর্ক করে দিয়েছে।

জাহাজটি ওই সাগরে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা চীনের কয়েকটি দ্বীপের কাছাকাছি বিতর্কিত জলসীমায় ঢুকে পড়েছিলো।

chardike-ad

বেইজিং বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই তৎপরতা অবৈধ এবং চীনের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলছে, এটা রুটিন অপারেশন এবং আন্তর্জাতিক জলসীমা আইন মেনেই তা করা হয়েছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের যে বিতর্কিত অঞ্চলটিকে চীন তাদের সমুদ্র সীমা বলে দাবি করছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকেই কিছু জাহাজ পাঠানোর পরিকল্পনা করছিল।

সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস লাসেন চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপটির ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে ঢুকে পড়ে।

চীনের কড়া হুমকি

যেমনটা প্রত্যাশিত ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। চীনের পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, এটি চীনের সার্বভৌমত্ব লংঘনের সামিল।

চীনের সরকারি গণমাধ্যমে এই ঘটনাকে এক নগ্ন উস্কানি বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র লু কাং অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন ইচ্ছে করেই দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

“যে কোন দেশের ইচ্ছাকৃত উস্কানির বিরুদ্ধে চীন শক্ত ব্যবস্থা নেবে…চীন তাদের আকাশ সীমা এবং সমুদ্র সীমার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।” চীনের “সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং স্বার্থে” আঘাত হানার বিরুদ্ধে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার করে দেন।

কিন্তু চীন যাকে নিজের সমুদ্র সীমা বলে দাবি করছে, সেটিকে চীনের অনেক প্রতিবেশী দেশ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমা হিসেবে।
২০১৩ সালে দক্ষিণ চীন সাগরের ডুবন্ত কোরাল রীফের ওপর মাটি ফেলে চীন এই কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ তৈরি করে, এরপর সেখানে সামরিক ব্যবহারের উপযোগী রানওয়ে এবং লাইটহাউজও বসানো হয়। এসবের লক্ষ্য ছিল চীনের সমুদ্র সীমা দক্ষিণ চীন সাগরের অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত করা।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নিয়েছে জাপান

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যা দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমা হিসেবে সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল, কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সেটিকে নিজের বলে দাবি করা যায় না। ওয়াশিংটন পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তারা ভবিষ্যতেও ঐ অঞ্চলে তাদের ভাষায় এরকম ‘স্বাধীন সমুদ্রচলাচল অভিযান’ পরিচালনা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র জাপানও একই ধরণের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, তারা এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আছে।

দক্ষিণ চীন সাগর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র পথগুলোর একটি। এই সমুদ্র পথে এখন বছরে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের পণ্য পরিবহন করা হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সে কারণেই চীনের মত এক অর্থনৈতিক পরাশক্তি এটিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে।

কিন্তু শুধু চীন নয়, ভিয়েতনাম এবং ফিলিপিন্সও একইভাবে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে তাদের সীমানা বাড়াতে চাইছে।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে জাপান, ফিলিপিন্স এবং ভিয়েতনামের পক্ষ নিয়ে ঐ অঞ্চলে সামরিক পেশি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে, তাতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে সামরিক উত্তেজনা সামনে আরও বাড়বে বলে আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা।

সুত্রঃ বিবিসি