Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আউট ছিলেন মাহমুদউল্লাহ!

mamudulah-zimbabwe৯ মিনিটের নাটক। আর তাতে ‘জীবন’ ফিরে পেয়ে ৫২ রানের ইনিংস খেলে ফেললেন মাহমুদউল্লাহ। অথচ তিনি রানআউট হয়ে গিয়েছিলেন ৩২ রানেই, ইনিংসের ৪৫তম ওভারের শেষ বলে সিকান্দার রাজার সরাসরি থ্রোতে।

তা কী করে হয়? টেলিভিশন রিপ্লেতে তো পরিষ্কার দেখা গেল থ্রোটা স্টাম্পে লাগার আগেই জিম্বাবুয়ের উইকেটকিপার রেজিস চাকাভার গ্লাভসে লেগে বেল পড়ে গেছে। ভাঙা স্টাম্পে থ্রো লাগলেও কি তাহলে আউট! ক্রিকেটের একটা নিয়ম এখানেই চোখ এড়িয়ে গেছে থার্ড আম্পায়ার এনামুল হকের। রাজার থ্রো স্টাম্পে লাগার আগে বেল পড়লেও পড়েছিল শুধু একটা বেলই। স্টাম্পের ওপর তখনো আরেকটা বেল রয়ে গেছে। সেই বেল পড়েছে রাজার থ্রো স্টাম্পে আঘাত করার পর, মাহমুদউল্লাহ তখনো ক্রিজের মাঝখানে।

chardike-ad

নিয়ম অনুযায়ী স্টাম্পের ওপর থেকে যদি দুটো বেলই পড়ে যায়, তাহলে দ্বিতীয়বার রানআউটের চেষ্টা করতে হলে হাতে বল রেখে স্টাম্প উপড়ে ফেলতে হবে। আর যদি একটা বেল পড়ে, দ্বিতীয়বার আরেকটা বেল ফেললেই আউট ধরা হবে। চাকাভার গ্লাভসে লেগে একটা বেল পড়লেও আরেকটা বেল থেকে গিয়েছিল বলেই রাজার ওই থ্রোতে মাহমুদউল্লাহকে রানআউট দেওয়া উচিত ছিল আম্পায়ারদের। লেগ আম্পায়ার আলিম দার অবশ্য আঙুল তুলেছিলেনও। আর মাহমুদউল্লাহ তো ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা দিয়েছিলেন মাঝ উইকেট থেকেই। ওই পরিস্থিতিতে থার্ড আম্পায়ার এনামুল হকই ফিল্ড আম্পায়ারদের আউট নিয়ে সন্দেহের কথা জানান বলে জানিয়েছে সূত্র।

আম্পায়াররা তখন থার্ড আম্পায়ারের কল চাইলে এনামুল টেলিভিশন রিপ্লে দেখে নটআউট ঘোষণা করেন। চাকাভার গ্লাভসে লাগার পরও যে একটা বেল স্টাম্পের ওপর থেকে গিয়েছিল, সেটা নাকি চোখ এড়িয়ে গেছে তাঁর। পরে আবারও রিপ্লে দেখে ভুলটা ধরতে পারেন এনামুল নিজেও। কিন্তু ততক্ষণে ভুল শোধরানোর সময় ছিল না। এ ব্যাপারে আম্পায়ার এনামুলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি। অবশ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলাকালীন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা থাকে আম্পায়ার-ম্যাচ রেফারিদের।

বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টা নিয়ে খেলা চলাকালীনই বেশ দৌড়ঝাঁপ করেছে জিম্বাবুয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট। ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন জিম্বাবুয়ের কোচ ডেভ হোয়াটমোর ও ম্যানেজার। শ্রীনাথ তাঁদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

কাল রাতে মুঠোফোনে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল জিম্বাবুয়ের কোচ ডেভ হোয়াটমোরের কাছে। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তিনি বলেছেন, ‘ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী যদি একটা বেল তখনো স্টাম্পের ওপর থেকে থাকে, তাহলে সেটা আউট। বাকিটা তো আপনারা দেখেছেনই।’

ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক চিগুম্বুরার কথায়ও পাওয়া গেছে ক্ষোভের আভাস, ‘এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। তবে আমি নিশ্চিত আপনারা সব দেখেছেন। আমরা ভেবেছি ওটা আউট। আপনাকে তো আইন মানতেই হবে…।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে অবশ্য বলেছেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম ওটা আউট। তবে আম্পায়াররা তাঁদের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমাদের সেটাই মেনে নিতে হবে।’

এর আগে মাঠেও এ নিয়ে আম্পায়ারদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছেন জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়েরা। কিন্তু মাঠের আম্পায়াররা থার্ড আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত বলে মেনে নেন। দূর থেকে দেখে অবশ্য তখন মনে হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহ উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর ফিল্ডারের কাছ থেকে বল নিয়ে চাকাভা স্টাম্প তুলে ফেললেও আম্পায়াররা কেন আউট দিলেন না, জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়দের অভিযোগ সেটা নিয়েই।

বাস্তবে তা নয়। আলিম দার আগেই আউটের কল দিয়ে দেওয়ায় বলটাই তো তখন ডেড!

ভিডিওঃ

সুত্রঃ প্রথম আলো