Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জন্মস্থান বাংলাদেশ এখন তাদের কাছে বিদেশ

Nilfamary-indiaজন্মের পর থেকেই সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর অবস্থান ছিল বাংলাদেশে। সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় করে। বিলুপ্ত ছিটমহলের অনেকেই ভারতীয় নাগরিক হওয়ার আবেদন করেন এবং নাগরিকত্ব পান। চলতি নভেম্বরে এসব নাগরিক দেশের চারটি জেলার ছিটমহল থেকে ভারত যেতে শুরু করেছেন। তেমনি সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী স্থায়ীভাবে ভারত গমনের জন্য বোরবার বিকেলে নীলফামারীর চিলাহাটি স্থলবন্দর দিয়ে ১৪টি পবিবারের ৪৮ জন সদস্য ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারত গমন করছেন।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি চেকপোস্টের মাধ্যমে বিলুপ্ত ছিটমহলের ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণকারী ৯৮টি পরিবারের মধ্যে প্রথম দফায় দুপুর সাড়ে ১২টায় ১৪টি পরিবারের ৪৮জন সদস্য ভারত গমন করার জন্য নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের আব্দুর রউফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আসে। সোয়া তিন ঘণ্টা ইমিগ্রেশন শেষে বিকেল সোয়া ৩টায় তারা ভারত গমন করেন।

chardike-ad

Nilfamary-indiaসীমান্তের ওপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করেছে বিশাল সবুজ প্যান্ডেল বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের বরণ করার জন্য। নভেম্বর মাসে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ৪ দফায় এ সীমান্ত দিয়ে ৪৮৭ জনের ভারত গমনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে তাদের সুষ্ঠভাবে ভারতের সীমান্ত অতিক্রম করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি থেকে ভারতদের হলদিবাড়ি পর্যন্ত একটি মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।

ভারতে গমনকারী বিলুপ্ত ৪২ নম্বর ছিটমহলের বাসিন্দা নিপেন্দ্র নাথ বলেন, আমার স্ত্রী, একপুত্রসহ ৩ জন ভারত যাচ্ছি। আর বাংলাদেশে আমার বড় পুত্র গিরিশ চন্দ্র রায় (২২), পুত্রবধূ ঝরনা রানী (২০), নাতনী পুজা রানী (২) ভারত যাচ্ছে না। যেহেতু ছিটমহল বিনিময়ের সময় ভারতে যাওয়ার জন্য নাগরিকত্বে স্বাক্ষর করেছি তাই যেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ছোট ছেলে আদেল চন্দ্র রায় চলতি বছর এক বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করে। কিন্তু জেলা প্রশাসককে আদেলের ফরম পূরণের জন্য অনুরোধ করা হলেও যেহেতু ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভারতে যেতে হবে তাই ছেলেটির ফরম পূরণ করতে পারেনি।

অনেকে আনন্দে ভারতে গেলেও চোখে মুখে ছিল হতাশা ও বেদনার ছাপ। বিকেল সাড়ে ৩টায় ভারতের নতুন নাগরিকদের স্বাগত জানায়, ভারতীয় কতৃপক্ষ। এসময় নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান, ডামার উপজেলা নির্বাহী কর্মমর্তা সাবিনা সুলতানা, বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল ওহাব, নীলফামারীর সহকারী কমিশনার (কাস্টমস) হুমাউর হাফিজ, রাজস্ব কর্মকর্তা আহসান হাবীব, ডোমার থানা পুলিশের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, চিলাহাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মনছুর আলীসহ পুলিশ, বিজিবি, সরকারি দফতরের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত পথ দিয়ে ২২ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৪ দফায় ১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণকারী ৯৮টি পরিবারের ৪৮৭ জন সদস্য ভারত গমন করবে মর্মে প্রশাসন যাবতীয় কার্যক্রম তৈরি করে রেখেছে।

প্রথম দফায় বোরবার ২২ নভেম্বর সকাল ১১টায় ৯৮ নম্বর বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের একটি পরিবার, ৩২ নম্বর বিলুপ্ত নাটকতলা ছিটমহলের ২টি পরিবার, ৩৪ নম্বর বিলুপ্ত বেনুয়ারডাঙ্গা ছিটমহলের ১টি পরিবার, ৩৬ নম্বর বিলুপ্ত কাজলদিঘী ছিটমহলের ১টি পরিবার, ৪১ নম্বর বিলুপ্ত নাজিরগঞ্জ ছিটমহলের ৪টি পরিবার ও ৪২ নম্বর বিলুপ্ত নাজিরগঞ্জ ছিটমহলের ৬টি পরিবারসহ ১৪টি পরিবার ভারত গমন করে।

আগামীকাল সোমবার ভারত যাবে ২ নম্বর বিলুপ্ত কোট ভাজনি ছিটমহলের ৩০ পরিবার ও ৩ নম্বর বিলুপ্ত বালাপাড়া খাগড়াবাড়ির ১টি পরিবারসহ ৩১টি পরিবার।

তৃতীয় দফায় ২৪ নভেম্বর ভারত যাবে এক নম্বর বিলুপ্ত দহলা খাগড়াবাড়ি ছিটমহলের ২৯টি পরিবার।

চতুর্থ দফায় ২৬ নভেম্বর ভারত যাবে এক নম্বর দহলা খাগড়াবাড়ি বিলুপ্ত ছিটমহলের ১৭টি পরিবার ও ৩৮ নম্বর দইখাতা বিলুপ্ত ছিটমহলের ৬টি পরিবারসহ ২৩টি পরিবারকে ভারত যাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।(জাগোনিউজ)