উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার উচ্চপর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত শহরে দুই দেশের উপমন্ত্রী পর্যায়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে খুব বড় ধরনের অগ্রগতির আশা না করা গেলেও গত আগস্ট থেকে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা এবং কয়েক দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে কিছুটা হলেও উত্তরণ ঘটবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে, উপমন্ত্রীদের পর্যায়ে এ বৈঠক বৈরি দুই দেশের মধ্যে ঐক্যের ব্যাপারে খুবই অর্থবহ ইঙ্গিত। কারণ আগে অনেকবার বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নানা কারণে তা ব্যর্থ হয়েছে।
১৯৫০-৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধে আলাদা হয়ে যাওয়া দুই কোরিয়ার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে পুনর্মিলনীর ব্যাপারে আরো আলোচনার চায় দক্ষিণ কোরীয় কর্তৃপক্ষ।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০০৮ সালে ডায়মন্ড মাউন্টেইন রিসোর্টে দুই দেশের নাগরিকদের পুনর্মিলনী হওয়ার কথা থাকলেও দক্ষিণ কোরিয়া তা বাতিল করে দেয়। নাটুকে ওই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে উত্তর কোরিয়া তাদের কাছ থেকে জবাবদিহিতা চাইতে পারে। উত্তর কোরিয়ার সেনারা দক্ষিণ কোরিয়ার দুই পর্যটককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ওই অনুষ্ঠান বাতিল করে দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রিকরণ উপমন্ত্রী ও দুই দেশের মধ্যকার আলোচনার প্রধান মধ্যস্থাকারী হাওয়াং বুগি বৈঠক শেষে বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যকার আলোচনার জন্য প্রচুর বিষয় আছে। আমরা ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। এক সময় আমরা সর্বোচ্চ অবস্থানটা দিতে পারবো।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ আলোচনায় দুই দেশের পরিস্থিতির সহসাই উত্তরণ ঘটবে এমনটা আশা করা যায় না। কারণ এই দুই শত্রুরাষ্ট্রের অনেক বড় বড় বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার এবং ২০১০ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়া দেশটিতে অর্থনৈতিক অবেরাধ আরোপের বিষয়গুলোও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীর একটি টর্পেডোর আঘাতে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধজাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ৪৬ জন নিহত হওয়ার বিষয়ে সিউল অভিযোগ করে আসছে।
সম্পর্কের উন্নতি নির্ভর করছে মূলত উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আন্তরিকতার ওপর। গত মে মাসে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পাটির কংগ্রেসে উন দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন।
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া