
উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র কার্যক্রমকে ঘিরে দুই কোরিয়ার মধ্যে নতুন করে সৃষ্ট উত্তেজনার জেরে উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম জং উন দ. কোরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছে বলে সিউলের তরফে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে’র জনকল্যাণ বিষয়ক প্রধান সচিব কিম সুং উ গতকাল বৃহস্পতিবার এই আশংকা প্রকাশ করেন।
মি. কিম সুনহ উ’র বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা সে দেশের প্রেসিডেন্টের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে যা কিনা দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের জীবন ও নিরাপত্তার উপর সরাসরি হুমকি হয়ে আসতে পারে। প্রেসিডেন্সিয়াল সচিব সন্ত্রাসী হামলার এই সম্ভাবনাকে ‘অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশী জোরালো’ বলেও অভিহিত করেছেন।
দ. কোরিয়ার ক্ষমতাসীন স্যানুরি পার্টির সাংসদ লি ছল উ’ও ওই কর্মকর্তার অনুরূপ আশংকা প্রকাশ করে সিউলের গোয়েন্দা সংস্থা এমন হামলার জোর সম্ভাবনার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। হামলার অংশ হিসেবে সাইবার আক্রমণ, দ. কোরিয়ার নাগরিকদের অপহরণ ও বিষাক্ত গ্যাস নির্গমনের মতো ঘটনা ঘটানো হতে পারে। সাংসদ লীর ভাষ্যমতে হামলার লক্ষ্য হতে পারেন উত্তর কোরিয়া বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ, দেশত্যাগী উত্তর কোরিয়ান নাগরিক ও দ. কোরিয়ার সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ। সম্ভাব্য হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে সাবওয়ে স্টেশন, বিপণী বিতান, পাওয়ার প্ল্যান্ট ও অন্যান্য জাতীয় স্থাপনাসমূহ।
এদিকে অব্যাহত পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন করে আরোপিত এক অর্থনৈতিক অবরোধে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এই অবরোধ পরমাণু অস্ত্র কার্যক্রমে পিয়ংইয়ংকে সহযোগিতা করা যে কোনো দেশের জন্য কার্যকর হবে।
এছাড়া দ. কোরীয় গণমাধ্যমসমূহ দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে বলছে যে আগামী মাসের যৌথ সামরিক মহড়ায় কোরীয় সেনাদের সাথে অংশ নেবে ১৫ হাজার মার্কিন সেনা যা কিনা সংখ্যার হিসেবে গত বছরের দ্বিগুণ। এর মাধ্যমে এটি বিশ্বের যে কোনো সময়ের সবচেয়ে বড় যৌথ সামরিক মহড়ায় পরিণত হবে। এই মহড়াকে ‘উত্তর অভিমুখে হামলার ছক’ বলে পিয়ংইয়ং বরাবরই দাবী করে আসছে। ফলশ্রুতে মহড়ায় মার্কিন সৈন্য বৃদ্ধির ঘটনা দুই কোরিয়ার মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনাকে কোন পথে ঠেলে দেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।