Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব বান কি মুনের

bankimunকাশ্মীর ভূখণ্ড নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার এ প্রস্তাব দেন জাতিসংঘ মহাসচিব। খবর এএফপি।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি উভয় পক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সহনশীলতা প্রদর্শনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি দ্রুততার সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে উভয় পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।

chardike-ad

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের উচিত আলাপ-আলোচনা ও কূটনৈতিক তত্পরতার মাধ্যমে বিষয়টির মীমাংসা করা। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করতে পারে। উভয় পক্ষ চাইলে এ বিষয়ে কাজ করতে জাতিসংঘ সবসময় প্রস্তুত।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর মালিহা লোদি এএফপিকে বলেন, পুরো অঞ্চলের জন্যই বর্তমান পরিস্থিতি ভয়াবহ। ক্রমেই এ সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। সংকট এড়াতে চাইলে এক্ষেত্রে তার (বান কি মুন) মধ্যস্থতা জরুরি।

বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ভারতকে দায়ী করে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং পুরো বিশ্বপরিস্থিতির জন্যই হুমকিস্বরূপ।

এর আগে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছিলেন, উত্তেজনা প্রশমনে নেয়া যেকোনো উদ্যোগ বা প্রস্তাবকেই জাতিসংঘ মহাসচিব স্বাগত জানাবেন। ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণরেখায় উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তিনি সজাগ দৃষ্টি রাখছেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের একটি সামরিক পর্যবেক্ষক দল (ইউএনএমওজিআইপি) নিয়ন্ত্রণরেখায় অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও তারা মহাসচিবের কাছে দেবেন। নিয়ন্ত্রণরেখায় এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সরাসরি গোলাগুলির ঘটনা ইউএনএমওজিআইপি প্রত্যক্ষ করেনি।

এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের মিশন থেকে এএফপির কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সৃষ্টি করেনি। এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টির ইচ্ছাও আমাদের নেই। সন্ত্রাসবিরোধী সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা শুধু অভিযান চালিয়েছি। এটি নির্দিষ্ট এলাকা ও লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের দেয়া গুরুতর হুমকির বিপরীতে এটি আমাদের নেয়া সুস্পষ্ট ও সমানুপাতিক প্রতিক্রিয়ার একটি প্রতিফলনমাত্র।

মালিহা লোদি জানান, আগামী নভেম্বরে ভারত ও পাকিস্তান সফরের কথা রয়েছে জাসিংঘ মহাসচিবের। বর্তমান সংকট নিরসনে ওই সফরসূচি এগিয়ে আনার জন্য তিনি বান কি মুনকে অনুরোধ করেছেন। এর আগে তিনি গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক করেন। ওই সময় এ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিল নিউজিল্যান্ড। জাতিসংঘে দেশটির রাষ্ট্রদূত জেরার্ড ভ্যান বোহেমেনের সঙ্গে বৈঠকে লোদি বর্তমান পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানান। অবশ্য চলতি মাসে পরিষদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে স্থায়ী সদস্য রাশিয়া।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে হামলায় দেশটির ১৮ সেনাসদস্য নিহত হন। এ ঘটনার জন্য শুরু থেকেই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে ভারত। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘সার্জিক্যাল অপারেশন’ পরিচালনার দাবি করে ভারত। ওই অভিযানে দুই পাকিস্তানি সেনাসদস্য নিহত হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুই দেশের যুদ্ধংদেহী বাক্যবিনিময়ের মধ্যেই গত শুক্রবার ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ১০ কিলোমিটার এলাকার আশপাশের গ্রামগুলো থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নেয় ভারত। গতকালও দুই দেশের সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।