base_1475954625-cgyju

সহজ ম্যাচটাকে যেন বড্ড কঠিন করে জিতল বাংলাদেশ। ১৫৯ রানে নয় উইকেট হারানো ইংলিশদের ইনিংস থামল ২০৪ রানে। শেষ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৫ রানের রেকর্ড রানের জুটি গড়ে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের উত্সবের অপেক্ষা বাড়িয়েছেন আদিল রশিদ ও জ্যাক বল। শেষ পর্যন্ত ৩৪ রানের জয়ে সমতায় ফিরল স্বাগতিক বাংলাদেশ। বুধবার চট্টগ্রামে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

chardike-ad

ম্যাচের ৪৫তম ওভারের চতুর্থ বলে জ্যাক বল (২৮) মাশরাফিকে উড়িয়ে মারলে ডিপ স্কয়ার লেগের বাউন্ডারি লাইন থেকে ক্যাচ লুফে নেন নাসির হোসেন। আর সঙ্গে সঙ্গেই উত্সবে মাতোয়ারা হয়ে উঠল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দর্শকঠাসা গ্যালারি। এর মধ্য দিয়ে যেন ঘটল ২০১৬ সালে বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে পাওয়া সুখস্মৃতির পুনরাবৃত্তি।

ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রানের পুঁজি দাঁড় করায় মাশরাফি ব্রিগেড। জবাবে ৪৪.৪ ওভারে ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। ব্যাট হাতে ৪৪ রান ও বল হাতে চার উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন স্বাগতিক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের নৈপুণ্যে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতা। আর এতে রোমাঞ্চের সবটুকু রসদ জমা রইল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচকে ঘিরে।

জয়ের জন্য ২৩৯ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। স্কোরবোর্ডে ২৬ রান তুলতেই টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারায় সফরকারীরা। ওপেনার জেমস ভিন্সকে (৫) ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম আঘাত হানেন মাশরাফি। এর পর অভিষেকে দারুণ এক অর্ধশতক করা বেন ডাকেটকে শূন্য রানে বোল্ড আউট করেন সাকিব আল হাসান। পর পরই জোড়া আঘাত হানেন মাশরাফি। জেসন রয়কে (১৩) ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বেন স্টোকসকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি।

দ্রুত চার উইকেট হারানোর পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জনি বেয়ারস্টো ও জস বাটলার। পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৭৯ রানের জুটি। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই এ দুজনকে সাজঘরমুখো করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে জমা পড়েন জনি বেয়ারস্টো (৩৫)। আর বাটলারকে (৫৭) ফেলেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। বাটলার ফিরে যাওয়ার আগে সাকিবের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন মঈন আলী। ১২০ রানের মাথায় অষ্টম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এ অবস্থায় সহজ জয়ই প্রাপ্য হয়ে ওঠে বাংলাদেশের। কিন্তু দশম উইকেট জুটিতে দারুণ প্রতিরোধ গড়েন রশিদ (৩৩*) ও বল (২৮)। সফরকারীদের শেষ প্রতিরোধও গুঁড়িয়ে দেন মাশরাফি।

ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ইংলিশ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস (১১), তামিম ইকবাল (১৪) ও সাব্বির রহমান (৩)। স্কোরবোর্ডে তখন ৩৯ রানে তিন উইকেট। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন মাহমুদউল্লাহ। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৫০ রান। কিন্তু ২২তম ওভারের শেষ বলে তাতে আঘাত হানেন পেসার বল। মুশফিক (২১) আউট হওয়ার পর পরই বেন স্টোকসের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান সাকিব (৩)। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে তুলে নেন ৪৮ রান। আদিল রশিদের ঘূর্ণিতে বিদায় নেন দুজনই। আউট হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ খেলেন ৭৫ রানের এক অনবদ্য ইনিংস। ব্যক্তিগত ২৯ রানে সাজঘরমুখো হন মোসাদ্দেক।

বাংলাদেশ ইনিংসের শেষটা নিজের রঙে রাঙান মাশরাফি। মাত্র ২৯ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে ৪৪ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ইনিংসটি সাজান তিনটি ছক্কা ও দুটি চারের সমাহারে।