প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ। শুক্রবার রাত থেকেই কার্যকর হয়েছে।
এদিকে নিজেদের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত টেলিভিশন মালিকদের; আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
টেলিভিশনে দর্শকদের পছন্দ প্রাধান্য পাচ্ছে কি?
টান টান উত্তেজনার গোয়েন্দা কাহিনী নির্ভর বিদেশি সিরিয়াল দেখছেন তানিয়া আকতার। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তানিয়া বিদেশি এই সিরিয়ালটি প্রতিদিন নিয়ম করে দেখেন। তানিয়া বলছিলেন বাংলাদেশের ৩০টির মত চ্যানেলের এত অনুষ্ঠান ছেড়ে কেন তিনি এই অনুষ্ঠানটি দেখেন?
এসব বিদেশি সিরিয়াল বন্ধের দাবি জানিয়েছে কিছু চ্যানেলের মালিক পক্ষ ও শিল্পী-কলা-কুশলীরা। একই সাথে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে প্রচার না করার প্রতি জোর দিচ্ছে তারা।
একটি স্কুলের শিক্ষিকা মারিয়া তাবাস্সুম। তিনি বলছিলেন “দর্শকদের পছন্দদের দিকে যদি নির্মাতারা গুরুত্ব দিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করেন তাহলে বিদেশি সিরিয়াল গুলো থেকে দর্শকরা নিজেরাই বিমুখ হবেন”।
তিনি বলছিলেন, “আমাদের দেশের নির্মাতাদের উচিত বিদেশি সিরিয়াল যেটা আমরা দেখছি সেগুলোর মত বা ভাল কিছু নির্মাণ করা। যাতে আমরা বাংলা অনুষ্ঠান দেখতে উৎসাহ বোধ করি।”
এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে অনুষ্ঠান নির্মাণের সময় দর্শকদের চাহিদা কথাটা খেয়াল রাখা হচ্ছে? গণমাধ্যম বিশ্লেষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলছিলেন দর্শকদের চেয়ে বিজ্ঞাপনদাতা বা স্পন্সরদের চাহিদাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন নির্মাতারা।
“বিজ্ঞাপনদাতা কী ধরণের অনুষ্ঠান চায়, স্পন্সর কী ধরণের অনুষ্ঠান চায় সেটাই তাদের প্রধান বিবেচ্য বলে মনে হয়।”
“আমি কোথাও দেখিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোন টিভি চ্যানেল দর্শকদের মতামত আহ্বান করেছে বা দর্শকদের চাহিদা জানার চেষ্টা করেছে বা ফিডব্যাক জানার চেষ্টা করেছে। না হলে কিছু কিছু টিভি চ্যানেলে একই রকম অনুষ্ঠানের আধিক্য কেন হবে?” প্রশ্ন রেখেছেন জাহাঙ্গীর।
বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলেগুলোর অনুষ্ঠান সম্পর্কে দর্শকদের পছন্দ অপছন্দ জানানোর প্রাতিষ্ঠানিক কোন প্লাটফর্ম নেই। গৃহিণী সানজিদা রহমান বলছিলেন দর্শক মতামতকে বিবেচনায় রেখে অনুষ্ঠান তৈরি না করার কারণেই বিদেশি অনুষ্ঠানের প্রতি ঝুঁকছে দর্শক।
কয়েকজন দর্শক বলছিলেন বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে আগের থেকে মানসম্মত কিছু অনুষ্ঠান নির্মাণ হচ্ছে। তবে সেগুলোর সংখ্যা হাতেগোনা।