যে হাসপাতাল মানুষকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে সহায়তা করবে সে হাসপাতালের ভেতরেই যে এমন একজন খুনি ছিল, তা অন্যরা ভাবতেও পারেনি। তেমন কাণ্ডই ঘটালেন জার্মানির এক নার্স।
প্রায় দুই বছর আগে ধরা পড়েন সেই জার্মান পুরুষ নার্স, যার নাম নিয়েলস হোয়েগেল। প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের দুই রোগীকে খুন করার অভিযোগ আনা হয়। সে অভিযোগেই তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
দুই খুনের শাস্তি হওয়ার পর অনুসন্ধানে একে একে বের হয়ে আসতে থাকে এ নার্সের ভয়ঙ্কর কীর্তিকলাপ। জানা যায়, তিনি ইনজেকশনের মাধ্যমে সে হাসপাতালে আরও বহু খুন করেছেন। আর তার শিকাররা সবাই রোগী হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীও মনে করেছিল তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে।
হাসপাতালে কাজ করার সময় প্রাণঘাতী ইনজেকশন ব্যবহার করে একে একে প্রায় ৯০টি খুন করেন তিনি। তবে সবগুলো ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কারণ তিনি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিতেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তিনি ৯০টি খুন করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ তার শিকার ব্যক্তিদের অনেককেই ধর্মীয় কারণে সৎকার করার সময় পুড়িয়ে ফেলা হয়। এছাড়া পুরনো বহু ঘটনার তথ্য প্রমাণও নেই।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সে নার্স যে দুটি হাসপাতালে কাজ করেছেন, সেখানে মৃত্যুর হার বেশি ছিল। সেসব অস্বাভাবিক মৃত্যুর পেছনে তার হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ জন্য ১৩০টি মৃতদেহকে তারা পরীক্ষা করছেন। কয়েকটি মৃত্যুর ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতাও পাওয়া গেছে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর থেকে জার্মানির ইতিহাসে একজনের এত খুনের রেকর্ড নেই। আর এ কারণে বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে।