Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইতালি প্রবাসী জাকিরের আশা নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন

jakirমানুষ আশায় বাঁচে। চিরন্তন এ সত্যকে বুকে লালন করে মানবজগতের সবাই। ইউরোপের সোনার হরিণ ধরতে অনেকেই দেশ হতে দেশান্তর হয়। সবার ভাগ্যে নাকি সুখ সয় না। এমনই এক পরিস্থিতির মুখোমুখি ইতালি প্রবাসী জাকির হোসেন। মৃত্যু যে এত সহজেই তাকে কাছে ডাকবে। এমনটাই বা কার জানা আছে।

স্বচ্ছল হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইতালি পাড়ি জমান জাকির হোসেন নামের টগবগে এক যুবক। জীবন পরিবর্তনের আশায় উন্নত দেশে এসেও সেই স্বপ্ন এখন ভঙুর হতে চলেছে। একটা সময় ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে দেশান্তর হয়েছে। এখন সে বিত্তবান হওয়ার স্বপ্ন আর দেখে না এখন তার বাঁচার আকুতি। কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অসহায় জীবন অতিক্রম করছে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে।

chardike-ad

২০১২ সালের ৬ জুলাই ইতালিতে আসেন জাকির হোসেন। পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটাতে সবার মায়া ত্যাগ করে জীবিকার জন্য পরবাসী হন। কিন্তু ভাগ্য যে এত দ্রুত খারাপ হবে এমনটি কখনও প্রত্যাশা করেননি তিনি। ইতালিতে আসার তিন বছর পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত তিন বছরও তার খুব একটা ভালো কাটেনি।

ইতালিতে আসার পর থেকেই তিনি অবৈধ। নানা রকম ঝামেলায় কাটে তার প্রতিদিনকার সময়। বৈধ হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন জাকির। শেষ পর্যন্ত বৈধ হওয়া আর হলো না তার। ২০১৫ সালে হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে স্থানীয় ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। শরীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ধরা পড়ে তার কিডনি বিকল।

এমন কথা শোনার পর তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে জাকির। কারণ ডাক্তার বলেছেন, যেকোনো সময় পৃথিবীর আলো দেখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অন্ধকার নেমে আসতে পারে তার জীবনে। তবুুও তিনি আরও কিছুদিন বাঁচার স্বপ্ন দেখেন। দেখতে চান পৃথিবীর আলো। বিছানা যেন তার পরমবন্ধু। সপ্তাহে তিনদিন তাকে ডায়ালিসিস দিতে হয়। এটাই তার বাঁচার শেষ অবলম্বন।

জাকির তার সংসারের বড় সন্তান তাই তার দায়িত্ব অনেক বেশি। মরণব্যাধি তার সেই দায়িত্বটুকু পালন করতে দেয়নি। জাকিরের দেশের বাড়ি টাঙ্গাইল। পিতা আব্দুল আজিজ, গ্রাম কাঠুয়া। আসার পর থেকে অবৈধ তাই ভালো কোনো কাজ পাননি। অর্থনৈতিক কাঠামো তেমন একটা ভালো নয়।

সেজন্য দেশ ও দেশের বাইরে সবার কাছে শুধু দোয়া কামনা করেছেন। তার এই মরণব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তবু কারও কাছে সহযোগিতার হাত বাড়াননি। যদিও টাকা যোগান দেয়ার মতো তার পরিবারের সামর্থ্য নেই। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে সবার দোয়ায় এদেশের সরকারি সহযোগিতায় বিনা টাকায় সম্প্রতি সফলভাবে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

এখন সে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে পুরোপুরি। তাই সবার কাছে পরিপূর্ণ সুস্থতা লাভে আবারও দোয়া চেয়েছেন ইতালি প্রবাসী জাকির হোসেন। হয়ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাবে। নিজের পরিশ্রম দ্বারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। সৌজন্যে: জাগো নিউজ