Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ব্যবসার লোভ দেখিয়ে বিদেশি চক্রের প্রতারণা

forien-arrestবাংলাদেশে বড় ব্যবসার লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে আসছিল বিদেশি একটি প্রতারক চক্র। ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই নগদ অর্থ খুইয়েছেন। সম্প্রতি জিয়া নামে একজন বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ১১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ফাঁদে ফেলে আড়াই কোটি টাকার প্রতারণা করেছে ক্যামেরুনের একটি প্রতারক চক্র।

অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তরা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ফুতসুসহ ওই প্রতারক চক্রের ক্যামেরুনের তিন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। আটকরা হলেন- ক্যামেরুনের নাগরিক কুয়াতে ফুতসু, আমেলিন মাওয়াবো ও এমবিদা একানি। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ ইউরো এবং বিদেশি মদ জব্দ করা হয়েছে।

chardike-ad

শুক্রবার (১০ নভেস্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, গত এক মাস আগে রোজার্স নামে একজন নিজেকে জার্মানির নাগরিক দাবি করে জিয়াকে ফোন করে ১১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার কথা বলেন। এ জন্য একজন খুব শিগগিরই বাংলাদেশে তার সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানান। এর কয়েকদিন পর বোস্তাভো স্টিভস নামে জিয়াকে ফোন করে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে দেখা করতে বলেন ফুতসু। পরে তাদের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয় এবং কিভাবে টাকা দেশে আনবে, কোন খাতে বিনিয়োগ করবে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।

কয়েকদিন পর ফুতসু ইউরোপে পাঠানোর জন্য আড়াই লাখ ইউরো চান জিয়ার কাছে। ডলারের বিনিময়ে ইউরো দেবেন এবং ২০ লাখ টাকা বেশি দেবেন বললে সে ইউরো জোগাড় করেন।

৩১ অক্টোবর রাতে ফুতসুকে নিজ বাসায় দাওয়াত দেন জিয়া। ফুতসু ও তার আরেক সহযোগীকে নিয়ে বাসায় যান এবং খাওয়া শেষে ইউরোগুলো দেখতে চাইলে কাগজের প্যাকেটে মোড়ানো ইউরো দেখান জিয়া। এ সময় তাদের মধ্যে একজন একটা তরল পদার্থের বোতল বের করেন এবং জিয়ার সামেন সেটি ফেলে দেন। এতে জিয়ার গায়ে তরল পদার্থ লাগে এবং ঝাঁঝালো একটা গ্যাস বের হয়। এটা বিষাক্ত উল্লেখ করে জিয়াকে ফ্রেস হয়ে আসতে বলেন তারা।

জিয়া ফ্রেস হতে গেলে কাগজের প্যাকেট থেকে ইউরো নিয়ে সেখানে সাদা কাগজ রেখে দেন ফুতসু। জিয়া বের হয়ে এলে তারা বলেন, আজ ডলার আনেনি পরের দিন এসে ডলার দিয়ে ইউরো নিয়ে যাবেন। ওইদিনের মত তাদেরকে বিদায় জানান জিয়া।

পরের দিন ফুতসুকে জিয়া ফোন করলে কোনো সাড়া না পেয়ে বাসায় গিয়ে দেখেন ইউরো নেই, সাদা কাগজের বান্ডেল। তখন বুঝতে পারেন লোভে পড়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি।

র্যাব এখন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতারণার দায়ে ২ শতাধিক বিদেশিকে গ্রেফতার করেছে জানিয়ে মুফতি মাহমুদ বলেন, এ অপরাধে অনেক সময় বিদেশিদের সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশিরাও জড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার চক্রটির সঙ্গে কোনো বাংলাদেশি জড়িত আছে কি না, বা আর কে জড়িত আছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে দুইজনের পাসপোর্ট পাওয়া গেলেও একজনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রতারণার একটি মাত্র কৌশল এই বিনিয়োগের আশ্বাস। কিন্তু চক্রটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে আসছিল। জাগো নিউজ