বিশ্বকাপে এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি দক্ষিণ কোরিয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে চোখ রাখছে তারা। দলের তারকা উইঙ্গার সোন হিউং মিন দেখাচ্ছেন সেই স্বপ্ন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে টটেনহাম হটস্পারে খেলেন তিনি। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় দলে অভিষেক হয় সনের। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৬৩ ম্যাচে করেছেন ২০ গোল।
ফিফা’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্ভাবনাসহ আরো অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন ২৫ বছর বয়সী সোন। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:
গ্রুপ পর্বে জার্মানি, সুইডেন, মেক্সিকোকে নিয়ে কি ভাবছেন?
সোন: এটা কঠিন গ্রুপ। প্রতিটি দলই আমাদের চেয়ে ভালো। কিন্তু কেউই হারতে চায় না। মানসিকভাবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নকআউট পর্বে ওঠার সম্ভাবনা কতটুকু?
সোন: আমি আশাবাদী। যদি আমরা ভালো খেলি এবং দলের প্রত্যেকে নিজের সেরাটা দিতে পারে তাহলে কেন নয়? কঠিন গ্রুপ হলেও আমরা আত্মবিশ্বাসী।
২০১৪ ব্রাজিলে প্রথম বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সোন: বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে খেলতে পেরে আমি গর্বিত। প্রতেক্যেই বিশ্বকাপে খেলার জন্য চার বছর অপেক্ষা করে। এখন আমার ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বিশ্বকাপ কতটা কঠিন তা আমি জানি। দল হিসেবে আমাদের তৈরি থাকতে হবে। ২০১৪ আসরে দলের অনেকেই তরুণ ছিল এবং বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না (২০১৪ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল দ. কোরিয়া)।
টটেনহ্যামের হয়ে প্রিমিয়ার লীগ কেমন উপভোগ করছেন?
সোন: প্রিমিয়ার লীগে খেলা আমার আজীবনের স্বপ্ন ছিল। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি এখানে খেলছি। এটা অবিশ্বাস্য অনুভূতি। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছি। ঘুমানোর আগে মাঝে মাঝে মনে হয় আমি স্বপ্নের মধ্যে আছি।
প্রিমিয়ার লীগ খেলোয়াড় হিসেবে আপনাকে কতটা পরিণত করেছে?
সোন: শারীরিক ও মানসিকভাবে আমি অনেক উন্নতি করেছি। আমার খেলার ধরনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। টটেনহ্যামের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে বুন্দেসলিগার (বায়ার লেভারকুসেন) চেয়ে আরো পরিণত করেছে। ক্লাব ও দেশের হয়ে আমার উন্নতির পেছনে টটেনহ্যামের অবদান অপরিসীম।
আপনার ফুটবল আইডল কে?
সোন: পার্ক জি সুং আমার আইডল। তিনি এখনো দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ফুটবলার। ছোটবেলায় প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচ দেখতাম। বিশেষ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কারণ পার্ক জি সুং সেখানে খেলতেন।
পার্ক জি সুংয়ের সঙ্গে খেলার অনুভূতি কেমন ছিল?
সোন: আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। ২০১১ এশিয়ান কাপে যখন তার সঙ্গে খেলেছিলাম আমার বয়স ছিল ১৮। বেড়ে ওঠার সময়ে টিভিতে তার খেলা দেখেছি। পার্ক জি সুংয়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি খুবই পেশাদার। তিনি শুধু একজন খেলোয়াড়ই নয়, তার ব্যক্তিত্ব অসাধারণ।
২০০২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ওই বিশ্বকাপ আপনাকে কতটা অনুপ্রাণিত করেছিল এবং আপনার প্রিয় স্মৃতি কি?
সোন: ২০০২ বিশ্বকাপ নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকার এখনো মনে আছে। সবাই রোমাঞ্চিত ছিল। কারো বিশ্বাসই হচ্ছিল না। নকআউট পর্বে ইতালি ও স্পেনকে হারানো সহজ ছিল না। ঘরের মাঠের সুবিধা থাকলেও সেবার দক্ষিণ কোরিয়া চমৎকার খেলেছে। ২০০২ বিশ্বকাপ থেকে নির্দিষ্ট কোনো স্মৃতি বাছাই করতে পারবো না। প্রতিটি মুহূর্তই ছিল চমৎকার।
মানবজমিনের সৌজন্যে।