Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাশেদের সুনাম

rashedতুরস্কে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি সাইয়েদ রাশেদ হাছান চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্সে ডিন’স মেরিট লিস্ট অব অনার ও ডিন’স মেরিট লিস্ট অব এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পাওয়া এ শিক্ষার্থী ২০১৬ সালে তুরস্কের সরকারি স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাশেদের সুনাম। বিস্তারিত জানাচ্ছেন জুনাইদ আল হাবিব-

সাইয়েদ রাশেদ হাছান চৌধুরী তুরস্কে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে গবেষণা করছেন আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজ’র স্কুল কো-অরডিনেটর ও ‘রিসার্চ সেন্টার অব সিভিলাইজেশন, সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড হিউমিনিটি স্টাডিজ’ এ। ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষার প্রথম পর্বে ফ্যাকাল্টিতে প্রথম স্থান অর্জন করে তাক লাগিয়ে দেন রাশেদ। ইতোমধ্যে রাশেদের গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হয়েছে তুরস্ক, ব্রিটেন, জার্মানি, সাইপ্রাস, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির বিভিন্ন জার্নালে। ইউরোপের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্সেও নিজের গবেষণা প্রবন্ধগুলো উপস্থাপন করেছেন তিনি।

chardike-ad

rashed

নিজের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম ছড়াচ্ছেন তিনি। জার্মান সংসদে বিশ্বের ২১টি দেশের সঙ্গে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার আমন্ত্রণ পেয়েছেন রাশেদ। মনোনীত হয়েছেন জার্মানির শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিসে (ডাড-২০১৮) সামার স্কুলের স্কলারশিপের জন্য।

২০ আগস্ট তিনি জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব ইর্ফোটে ‘কনফেশনালাইজেশন থিওরি’ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর গটিঙ্গেন ইউনিভার্সিটিতে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের নিরাপত্তা’ বিষয়ের ওপর গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। এতে অংশ নিতে ইতোমধ্যে রাশেদ তুরস্ক থেকে জার্মানিতে পৌঁছেছেন।

রাশেদ গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তুরস্কের খিরশেহিরে ‘ওসমানি সালতানাতের ধর্মীয় ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদকও অর্জন করেছিলেন।

rashed

রাশেদের গ্রামের বাড়ি উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে। তিনি মাতাব্বরনগর দারুসুন্নাহ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা আলী হোছাইনের ছেলে। এসব অর্জনের পেছনের গল্পটা কী? আর কেমন প্রতিবন্ধকতা ছিল তাতে? জানতে চাইলে রাশেদ বলছিলেন, ‘আমার আব্বু অধ্যক্ষ হওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকে অনেক উৎসাহ দিতেন। পাশাপাশি আম্মু সবসময় সহযোগিতা করতেন। আর আলহামদুলিল্লাহ, পড়ালেখায় তেমন কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল না। কারণ পরিবার থেকে সবসময় সহযোগিতা পেতাম। যে কারণে আমার পথচলা সমৃদ্ধ হয়েছে।’

রাশেদ বলেন, ‘এখনকার অনুভূতি খুব অসাধারণ, যখন নিজের দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করি! ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মানুষ যখন জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি কোন দেশের?’ তখন বললে অনেকেই বাংলাদেশকে চেনেন না। আবার প্রশ্ন করে, ‘আফ্রিকা মহাদেশে?’ তখন তাদেরকে বিশ্ব মানচিত্র দেখিয়ে বাংলাদেশের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।’

sentbe-adবাংলাদেশ সম্পর্কে নিজের অনুভূতি তুলে ধরে রাশেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম হই, তখন একটাই ভালো অনুভূতি ছিল। কিন্তু যখন আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হই, তখন আরো অসাধারণ অনুভূতি হয়। ক্লাসে বাংলাদেশকে অনেকে গরিব দেশ বললে খারাপ লাগতো। তাই যুক্তি-তর্কে জড়িয়ে পড়তাম। কিন্তু যখন প্রমাণে প্রথম হই, তখন আমার ডিন ও অনুষ্ঠানের সভাপতি বলতে শুরু করে, ‘বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে!’ তখন অসাধারণ অনুভূতি হয়।’

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও স্বপ্ন সম্পর্কে রাশেদ বলেন, ‘আমার প্রচুর খ্রিষ্টান ও ইহুদি বন্ধু আছে। তারা তাদের ধর্ম নিয়ে ব্যাপক গর্ব করে। কিন্তু আমরা মুসলিম হয়ে সত্যি তাদের মতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি না। তাই আমার পরিকল্পনা হলো, অনেক বড় একটি প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হওয়া। প্রতিটি মুসলিম দেশে ব্যাপক সমস্যা। তাই মুসলিম হিসেবে মুসলিমদের জন্য কাজ করাই হবে আমার জীবনের সার্থকতা।’

সৌজন্যে- জাগো নিউজ