Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

এবার চিকিৎসা বীমার আওতায় আসছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

health-insuranceনির্বাচনের আগে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আরও একটি সুখবর আসছে। উন্নত বিশ্বের মতো সরকারি চাকরিজীবী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য চিকিৎসা বীমা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এজন্য ব্যবস্থা নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চিকিৎসা বীমার আওতায় কোনো সরকারি চাকরিজীবী কিংবা পরিবারের সদস্য অসুস্থ হলে তার পুরো চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হবে। এজন্য প্রত্যেক সরকারি চাকরিজীবীর বেতন থেকে অল্প পরিমাণ অর্থ (যা এখনও নির্ধারণ হয়নি) কেটে নেয়া হবে।

chardike-ad

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা বীমার আওতায় আনার বিষয়ে কাজ চলছে। এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ তৈরি হচ্ছে। এরপর তা অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তিনি অনুমোদন দিলে পরে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে এটি কার্যকর হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আকস্মিক দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার ব্যয় বহনের মতো পৃথক কোনো হাসপাতাল নেই। ফলে বাধ্য হয়েই তাদের প্রাইভেট ক্লিনিক বা হাসপাতালে নিজ খরচে চিকিৎসা নিতে হয়। এর ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে পরিবারগুলো আর্থিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সব গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীর চিকিৎসার জন্য মাসিক দেড় হাজার টাকা খুবই অপ্রতুল। আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদের এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা বীমার আওতায় আনা যেতে পারে।

চিকিৎসা বীমার রূপরেখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এজন্য সবাইকে নির্ধারিত হারে প্রিমিয়াম দিতে হবে। এর ফলে যখন যার চিকিৎসার প্রয়োজন হবে, তখন তিনি প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা পাবেন।

এছাড়া যার চিকিৎসার প্রয়োজন পড়বে না, তিনি ওই বীমার কোনো সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না। কিন্তু প্রিমিয়াম ঠিকই দিতে হবে। কারণ প্রিমিয়ামের টাকা বেতন থেকে কেটে নেয়া হবে।

এ প্রক্রিয়ায় একজনের টাকায় অন্যরাও চিকিৎসা পাবেন। বিশেষ করে নিম্নবিত্তদের চিকিৎসায় উচ্চবিত্তদের আর্থিক অংশগ্রহণমূলক সহায়তার বাধ্যবাধকতা থাকবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও গবেষণা সেলের তথ্যানুযায়ী দেশে সরকারি চাকরিজীবীর মোট সংখ্যা ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৩ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৯১ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে এক লাখ ১৭ হাজার ৭৬১ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে আট লাখ ২৬ হাজার ৫১৭ জন এবং চতুর্থ শ্রেণিতে দুই লাখ ৫১ হাজার ৩৮৪ জন। চিকিৎসা বীমা চালু হলে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেকের চিকিৎসার খরচ জোগান দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ সুদে গৃহঋণের সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হবে বলে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন গত ৩০ জুলাই জারিও হয়। মূলত, এ ঋণে সরল সুদহার (সুদের ওপর সুদ নয়) ১০ শতাংশ। ১০ শতাংশ সুদের পাঁচ শতাংশ দেবে সরকার, বাকি পাঁচ শতাংশ বহন করবে ঋণগ্রহীতা।

সরকারি চাকরিজীবীদের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে গত ১০ বছরে বেতন বৃদ্ধি, পেনশন সহজীকরণসহ প্রায় দশ ধরনের সুবিধা দিচ্ছে সরকার।