অবশেষে মারা গেলেন গভীর রাতে সন্তান কর্তৃক রাস্তায় ফেলে যাওয়া বৃদ্ধা মা জোবেদা খাতুন। সোমবার রাত সোয়া ৮টায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ উদ্দিন মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শাহমাদার দরগা শরিফ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ১১ দিন হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন ওই বৃদ্ধা।
গত ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে মাদারীপুর শকুনী লেক পাড়ের রাস্তায় বৃদ্ধা জোবেদা খাতুনকে ফেলে যায় তার সন্তান ও পুত্রবধূ। সকালে সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বিলাস হালদার ও মেহেদী ইসলাম সকালে হাঁটতে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নিজের নাম আর সন্তান-বউ মিলে ফেলে রেখে যাওয়ার কথাটুকুই বলতে পেরেছিল তিনি। এরপর থেকে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তিনি। তার মৃত্যুর সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সিভিল সার্জন, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও মাদারীপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে ছুটে যান ।
উদ্ধারের দিন শিক্ষার্থী বিলাস হালদার জানিয়েছিলেন, ‘আমরা দুজনে বৃদ্ধাকে দেখে তাৎক্ষণিক সদর হাসপাতাল নিয়ে ভর্তি করি। তারপরে জেলা ছাত্রলীগের নেতা পিয়াস শিকদার, নাজমুল হোসেন, মাহমুদ হাসান দিনার, শাওন আহমেদ, অমল কুণ্ডসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে বিষয়টি বলি। তারাও ওই দিন হাসপাতালে এসে বৃদ্ধার চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেন।
ওই দিন বৃদ্ধা নিজের নাম ও তার সন্তান-বউ মিলে মারধর করে ফেলে গেছেন বলে জানান। সন্তানের এমন পৈশাচিক কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানিয়েছেল, ‘সন্তানরা যদি এখনো তার মাকে নিয়ে গিয়ে সেবা-যত্ন করতে চায়, আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। তবে যদি এমন অবস্থায় ফেলে রাখে, তাহলে তাদের পরিচয় পাওয়া গেলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’