সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত বন্দরে পরিণত হয়েছে। টানা পাঁচ বছর এ বিমানবন্দরটি ব্যস্ততার শীর্ষে অবস্থান করছে।
দুবাই তথা আমিরাতে অধিকহারে আন্তর্জাতিক যাত্রীর আসা যাওয়ার কারণে দুবাই বিমানবন্দরকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরে পরিণত করার মধ্য দিয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পাশাপাশি ৫ বছর যাবৎ এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে রেকর্ড ধরে রেখেছে। এর মধ্য দিয়ে এভিয়েশন সেক্টর দেশটির অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে অবদান বৃদ্ধি করছে।
দুবাই আন্তর্জাতিক বন্দর ২০১৮ সালে যাত্রীর উঠানামার হিসেবে ২০১৭ সালের চেয়ে ১%বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিমান বন্দরে ২০১৮ সালে মোট যাত্রী ছিল ৮৯.১ মিলিয়ন। ২০১৭ সালে যা ছিল ৮৮.২ মিলিয়ন। যদিও লক্ষ মাত্রা ছিল ৯০.৩ মিলিয়ন। কিন্তু গাল্ফে তেলের দাম কমায় অর্থনৈনিক মন্দার কারণে সেটা পূরণ হয়নি। গত দশকে এটি ছিল সবচেয়ে কম বৃদ্ধি। ২০১৪ সালে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরকে অতিক্রম করে দুবাই বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর হয়।
দুবাই বিমানবন্দরের সিও পল গ্রিফিথ এ বিষয়ে বলেন, দুবাই ওয়াল্ড সেন্ট্রোল এর একটি অংশের সম্প্রসারণ গত বছর শেষ হয়েছে। ফলে এটিতে এখন প্রতিবছর গড়ে ২৬ মিলিয়ন পেম প্যাসেঞ্জার ধারনের সক্ষমতা গড়ে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা নতুন পন্থা বের করেছি বন্দরের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে’। এই বিষয়ে লন্ডনের এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ সাজ আহমেদ বলেন, এমিরেটস এয়ার লাইন ও ফ্লাই দুবাই এই সফলতায় অবদান রেখেছে বিশেষ করে।
এই বিষয়ে সুলতান বিন সাইদ মানসুরি যিনি ইউ এ ইর অর্থ বিষয়ক মন্ত্রী ও বেসামরিক বিমান কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান তিনি বলেন, এই সেক্টরে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন দিরহাম ইনভেস্টম্যান করা হয়েছে। তিনি অতিরিক্ত ২৩ বিলিয়ন দিরহাম এভিয়েশন সেক্টরের অবকাঠামো নির্মাণে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান। আমরা আশা করি দেশের ২০% জিডিপি এই খাত থেকে আসবে যা আগে ছিল ১৫%। তিনি দুবাইয়ে সিভিল এভিয়েশনে বৈশ্বিক বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্ভোধনী বক্তব্যে এমনটি বলেন।
আমিরাতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দি খালিজ টাইমস এর তথ্যমতে গত বছর ইন্ডিয়ান যাত্রীই বেশি ছিল দুবাই বন্দরে। ইন্ডিয়ান যাত্রীর সংখ্যাটা ছিল ১২ মিলিয়ন যাত্রী। ইন্ডিয়ার কোচিন, দিল্লি, মুম্বাই থেকে প্রচুর যাত্রীও ছিল যাদের অধিকাংশ ভিজিটর হিসাবে এসেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সৌদি আরবের যাত্রী। ৬.৪৭ মিলিয়ন যাত্রী ছিল দেশটির। যুক্তরাজ্যের ৬.২৮ মিলিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩.২ মিলিয়ন, চায়নার যাত্রী ছিল ৩.৫ মিলিয়ন ও রাশিয়ার যাত্রী ছিল ১.৫৩ মিলিয়ন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ, পাকিস্তান শ্রীলংকাসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের যাত্রীর আশা যাওয়াও বেশ উল্লেখযোগ্য ছিল গত বছর।
দুবাই বিমানবন্দরটি বিশ্বে যেমন ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত তেমনিভাবে গ্রাহক সন্তুষ্টিতেও এ বিমানবন্দরটি পিছিয়ে নেই। এ বিমানবন্দর দিয়ে আগত যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ ইমিগ্রেশনে বা চেক ইন আউটসহ বিমানবন্দরে খানাপিনা, বেভারিজসহ ডিউটি ফ্রি মার্কেট হতে অপেক্ষাকৃত সূলভ মূল্যে পণ্য কেনাকাটায় যাত্রীরা অধিক সন্তুষ্ট।