Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঈদের নামাজ শেষে মেশিনের সাথে ঈদ উদযাপন কোরিয়া প্রবাসীর

korea-bdঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, এ কথা সবাই মানলেও, আমাদের মত প্রবাসীদের জীবনে ঈদের আমেজ খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন ভিন্নরকম বিশেষ করে খ্রিস্টান প্রধান দেশে ঈদের আমেজ কখনোই পাওয়া যায় না! এই নিয়ে আমি পঞ্চম বারের মত ঈদ উদযাপন করছি দূর প্রবাসে।

আজ বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন করছেন লক্ষ কোটি পরিবার, তাঁরাই শুধু ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন। আর আমাদের ঈদ মেশিনের সাথে উদযাপন করতে হয়, এমন ঈদের আনন্দ সত্যিই বলতে হয় অন্য রকম রোবটিক আনন্দ, যা সবার কপালে জোটেনা।

chardike-ad

সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির কমতি থাকে না। একের পর এক ঈদ আসে আর যায়, কিন্তু আমাদের মত প্রবাসীদের ঈদ রয়ে যায় নিঃসঙ্গতায়। দক্ষিণ কোরিয়াতে ঈদের ছুটি পাওয়া যায় না, যদিও মেলে তাহলে কোম্পানির মালিকে বুঝিয়ে শুধু মাত্র ঈদের নামাজটি আদায় করতে পরা যায়, নামাজ শেষে আবারও মেশিনের সাথে লেগে পরা। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা প্রবাসীরা সত্যি একরকম রোবটিক জীবন পার করি।

ফজরের আজানের পর দল বেঁধে ছোটাছুটি করে গোসল সেরে মিষ্টি মুখে নতুন জামা-কাপড় পরে ঈদগাহ মাঠে যাওয়া প্রবাসীদের কাছে এখন যেন শুধুই স্মৃতি। নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কেউ ডাক দিয়ে বলে না- সেমাই খেয়ে যাও। এখন আমরা সেমাই খেয়ে মুখ মিষ্টি না করতে পারলেও সকালে ঠিকই কোরিয়ান খাবার খেয়ে কর্মস্থলে যায়।

আজ কোরিয়াতে কর্মদিবস হওয়ায় ঈদের ছুটি নেই, আজ হাজারও প্রবাসীর ঈদ নিজ কর্মস্থল ফ্যাক্টরির মধ্যেই উদযাপন করছেন যন্ত্রপাতির সাথে। ঈদের দিন সকালে নিজ পরিবারকে একটু ফোন দেওয়ার সুযোগটাও থাকে না আমাদের।

কর্মঘণ্টা শেষ করে দেশে ফোন করার পর বুকের ভেতর কষ্টের তীব্রতা যেন আরও বেড়ে যায়। বুকফাটা যন্ত্রণাকে বুকে নিয়ে বিছানায় যেয়ে চোখের পানিতে বালিশ বিজিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেন আমাদের মত হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীরা,এরপর দুপুর গড়িয়ে পুবের সূর্যটা পশ্চিমে হেলতে শুরু করে। বিছানা ছেড়ে দু’একজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সামান্য আনন্দের প্রত্যাশায় অজানার উদ্দেশ্যে ছুটে চলা। এভাবেই কেটে যায় আমাদের মত প্রবাসীদের ঈদ নামের নিঃসঙ্গ বেদনার দিনটি।

লেখক: মোহাম্মদ আল আজিম, দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী