ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিম শিশুদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করছে চীন। ফলে এই শিশুরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ভাষা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। নতুন এক গবেষণা অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং প্রদেশে ওই শিশুদের রাখা হয়েছে।
হাজার হাজার প্রাপ্তবয়স্ক উইঘুর মুসলিমকে বন্দী করে রাখার খবর সামনে আসার পাশাপাশি এবার শিশুদেরও বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্য বোর্ডিং স্কুল তৈরির খবর পাওয়া গেছে। এ সব স্কুলে মুসলিম শিশুদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হচ্ছে। ওই অঞ্চলের শিশুদের সঙ্গে কি ঘটেছে সে বিষয়ে জানতে বেশ কিছু নথিপত্র এবং শিশুদের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতকার নিয়ে ব্যাপক প্রমান জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছে বিবিসি।
বিভিন্ন দলিল যাচাই করে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিনজিয়াংয়ের একটি শহরের চার শতাধিক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বাবা-মাকেও বিভিন্ন ক্যাম্প অথবা কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। উইঘুর মুসলিমদের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করার পাশাপাশি শিশু সন্তানদেরও তাদের মূল থেকে সরানোর প্রক্রিয়া হিসেবে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
শিনজিয়াংয়ে কড়াকড়ি আরোপ করে রেখেছে চীন। সেখানে ২৪ ঘণ্টাই বিদেশি সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ফলে সেখান থেকে কোন ধরনের তথ্য খুঁজে বের করা সম্ভব নয়। তবে তুরস্কে আশ্রয় নেওয়া অনেক উইঘুর চীনে থাকা অবস্থায় তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ইস্তাম্বুলের বড় একটি হলে বেশ কয়েকজন মুসলিম তাদের সন্তানদের ছবি দেখিয়েছেন। ওই শিশুরা সবাই নিখোঁজ রয়েছেন। এক মা তার তিন বছর বয়সী মেয়ের ছবি দেখিয়ে বলেন, আমি জানিনা আমার সন্তানকে এখন কে দেখাশুনা করছে। তার সঙ্গে তার সন্তানের কোন যোগাযোগ নেই।
আরেকজন মা তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে কাদঁতে কাঁদতে বলেন, আমি শুনেছি তাদের একটি এতিমখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই নিখোঁজ শিশুদের বাবা-মা অথবা আত্মীয় এমন ৬০ জনের সাক্ষাতকার নিয়েছে বিবিসি। তারা জানিয়েছেন, শিনজিয়াং থেকে শতাধিক শিশু নিখোঁজ রয়েছে।