শুক্রবার । ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট খেলা ২২ জুলাই ২০২৫, ৯:৫৩ অপরাহ্ন
শেয়ার

পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাসগড়া সিরিজ জয় টাইগারদের



উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় শোক জানিয়ে মাঠে নামে দুই দল। এই বেদনার মুহূর্তে খেলায় মনোযোগ ধরে রেখে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ৮ রানের নাটকীয় এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৩৩ রান। লক্ষ্য খুব একটা বড় না হলেও বল হাতে দুর্দান্ত সূচনা করে ম্যাচটা একপ্রকার আগেই নিজেদের দিকে টেনে নেয় টাইগাররা। পাকিস্তান ইনিংসের মাত্র ১৫ রানে নেই ৫ উইকেট! তখন স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের ১৩৩ যেন এক অতিকায় পাহাড়। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন স্কোর (৭৪) ভেঙে দেওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। তবে এক ফাহিম আশরাফ একাই প্রতিরোধ গড়ে জয়ের আশাও দেখাতে শুরু করেন।

শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কা কাটিয়ে ম্যাচের শেষ বলে পাকিস্তানকে ১২৫ রানে থামিয়ে ৮ রানের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন জাকের আলী। আর প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে একের অধিক ম্যাচ খেলা টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে ইতিহাসও গড়েছে টাইগাররা।

একাদশে ছিল দুই পরিবর্তন। বিশ্রামে ছিলেন তানজিদ তামিম, তার বদলে ওপেন করতে নামেন নাঈম শেখ। ব্যর্থতার মুখে পড়েন তিনি, ৩ রানে আউট। অধিনায়ক লিটন দাসও (৮) সুবিধা করতে পারেননি। এরপর রান আউট হয়ে শূন্য রানে বিদায় নেন তাওহীদ হৃদয়। ওপেনার ইমনের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান (১৪ বলে, একটি চার ও একটি ছক্কা)।

তখন স্কোর ২৫/৩। চাপের মুহূর্তে ইনিংস গুছিয়ে তোলেন জাকের আলী ও শেখ মেহেদি। ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন তারা। মেহেদি ২৫ বলে ৩৩ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন (২টি চার ও ২টি ছক্কা)। এরপর শামীম পাটোয়ারি ১ রান করে প্লেড অন হলে আবারও বিপদে পড়ে দল।

তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান জাকের। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে করেন ৫৫ রান, যার মধ্যে ছিল ৫টি ছক্কা ও একটি চার। অতিরিক্ত কিছু রান যোগ করেন তানজিম (৭) ও রিশাদ হোসেন (৮)। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ থামে ১৩৩ রানে।

জবাবে নেমে প্রথম ওভারেই রান আউট হন ওপেনার সাঈম আইয়ুব (১)। দ্বিতীয় ওভারে শরিফুল ইসলাম তুলে নেন ফখর জামান (৮) ও মোহাম্মদ হারিসকে (০)। এরপর তানজিম সাকিব এক ওভারে ফেরান হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজকে, দুজনেই শূন্য রানে বিদায় নেন। পাকিস্তান তখন ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে।

পরবর্তীতে অধিনায়ক সালমান আঘা (৮) ও অলরাউন্ডার খুশদিল শাহ (১৩) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি ছিল ক্ষণস্থায়ী। পাকিস্তান ৪৭ রানে হারায় ৭ উইকেট।

এক প্রান্ত আগলে রেখে ম্যাচ বাঁচাতে লড়াই চালিয়ে যান ফাহিম আশরাফ। আব্বাস আফ্রিদিকে সঙ্গে নিয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন তিনি। আব্বাস করেন ১৯ রান (১৩ বলে)। তবে ১৯তম ওভারের শেষ বলে রিশাদের বলে বোল্ড হয়ে যান ফাহিম। তার ৩২ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৪টি ছক্কা।

শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৩ রান। মুস্তাফিজ প্রথম বলেই চার খেলেন, কিন্তু পরের বলে উইকেট তুলে নিয়ে টাইগারদের জয় নিশ্চিত করেন।

ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন জাকের আলী। এদিকে বাংলাদেশ এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে নেয় ২-০ ব্যবধানে।