রকিবুল হাসান, কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলায় জন্ম। কুমিল্লা অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলে নিয়মিত পারফর্ম করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বো্র্ডে (বিসিবি) বয়সভিত্তিক দলেও সুযোগ পেয়েছিলেন। একটা সময় সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, এনামুল হক বিজয় সতীর্থ ছিলেন রকিবুল।
স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলতে নামবেন। তার বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারিতে করতালি পড়বে গ্যালারিজুড়ে, বাংলাদেশ ম্যাচ জিতবে, দেশের সেই এগারো সৈনিকের একজন হবেন তিনি। কিন্তু না। বাস্তবতা ভিন্ন।২০১১ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর সব কিছু কঠিন হয়ে পড়ে। ক্রিকেটের খরচ যোগানোর মতো কেউই ছিলেন না, এদিকে পরিবারকে অর্থনৈতিক সমর্থন করাও জরুরি হয়ে ওঠায় উপায় না পেয়ে ইতালিতে পাড়ি জমান।
তবে এই তরুণ স্বপ্নবাজের মন থেকে কি আর ক্রিকেট প্রেম মুছে যায়? থেমে থাকেননি প্রবাস জীবনেও। সেখানে কাজের ফাঁকে স্থানীয়দের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। এরপরই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা রকিবুলের ক্রিকেট প্রতিভার খবর ছড়িয়ে পড়ে ইতালির ক্রিকেট পাড়ায়। ডাক আসে স্থানীয় বেলোনিয়া ক্রিকেট ক্লাব থেকে। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সেখান থেকে পিয়ানোরা ক্রিকেট ক্লাবে ডাক পান। এই ক্লাব থেকে সরাসরি ইতালি জাতীয় ক্রিকেট দলে! সেই স্বপ্ন নিজ দেশে হয়ে পূরণ করতে না পারলেও পূরণ করলেন অন্য দেশের হয়ে।এখন ইতালি জাতীয় দলের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন বাংলাদেশের রকিবুল।
গত জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। আর তাতে রকিবুলের কৃতিত্বটাই ছিলো বেশি। এই মুহূর্তে ইতালির হয়ে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ চ্যালেঞ্জ লিগ খেলতে ব্যস্ত এ তরুণ ক্রিকেটার। সর্বশেষ ম্যাচে বল হাতে ১০ ওভারে মাত্র ৩৪ রান খরচায় নিয়েছেন এক উইকেট। তারপর ব্যাট হাতে ২৯ বলে অপরাজিত ৪৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে দারুণ জয়ও এনে দেন।