Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

nasimaমহামারি করোনাভাইরাস দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬৮ জনের। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫৬৪ জন। ফলে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল সাত হাজার ৬৬৭ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ১০ জন। সবমিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৬০ জন।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

chardike-ad

তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ হাজার ৬২৬টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে চার হাজার ৯৬৫টি। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৪ হাজার ৬৬৬টি। নতুন যাদের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের মধ্যে আরও ৫৬৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাত হাজার ৬৬৭ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও পাঁচজন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৮ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ১০ জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৬ জন।

নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং দুজন নারী। দুজন ষাটোর্ধ্ব এবং তিনজন চল্লিশোর্ধ্ব। বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৩৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৪২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৮৯১ জন।

সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার ৬৩৮টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে আছে তিন হাজার ৯৪৪টি এবং ঢাকার বাইরে পাঁচ হাজার ৬৯৩টি। বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৩৪১টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৬৭ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার ২৪৫ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ১১৫ জনকে। এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে নয় হাজার ২৭৪ জনকে। হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ১৮২ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৫১৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৮২ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৩৭ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৭১ হাজার ৪৮৩ জন।

ডা. নাসিমা সুলতানা বুলেটিনের শুরুতেই জানান, সবমিলিয়ে দেশে এখন ২৯টি সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। প্রতিদিনের বুলেটিনে সবগুলোর ফলাফল জানানো হবে।

তিনি জানান, নতুন করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগ এবং বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতাল (সাবেক অ্যাপোলো) নমুনা পরীক্ষা শুরু করেছে। স্কয়ার ও ইউনাইটেড হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ শুরু হলেও এখনো রিপোর্ট আসেনি। তাছাড়া ইতোমধ্যে ল্যাবএইড, ইবনে সিনা, তায়েরুনেসা মেমোরিয়াল হাসপাতাল (টিএমএমএস) ও রেফায়েতউল্ল্যাহ হাসপাতালও নমুনা পরীক্ষার আবেদন করেছে। আবেদনগুলো বিবেচনাধীন রয়েছে এবং শর্তসাপেক্ষে দুই-একদিনের মধ্যে তাদেরও অনুমোদন দেয়া হবে। নমুনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবের যে শর্ত দেয়া হয়েছে তা পূরণ করতে পারলে যে কোনো বেসরকারি হাসপাতালকে অনুমোদন দেয়া হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

চার মাস আগে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা সোয়া ৩২ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সোয়া দুই লাখ। তবে প্রায় ১০ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। যদিও এরই মধ্যে সীমিত পরিসরে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কিছু পোশাক কারখানা সীমিত পরিসরে খুলতে শুরু করেছে। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।