রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের নামে কোচিং সেন্টার খোলায় হাসান আলী নামে এক কলেজছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন মহানগর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ তাকে মহানগর কোতোয়ালি থানাহাজতে আটকে রাখে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় তার বাসায় যান নেতাকর্মীরা। এ সময় তার সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
এর আগে একটি ভিডিওতে রফিক আহমেদ রাজ নামের একজন ইংরেজি শিক্ষক শহীদ আবু সাঈদ কোচিং সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সে ভিডিও। কলেজছাত্র হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কোচিং সেন্টারের ফেসবুক পেজটি খুলে দিয়েছেন।
রাতে কোতোয়ালি থানায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে বসে আছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মী। আর হাসানকে হাজতে রাখা হয়েছে। হাজতের বাইরে তার স্ত্রী ও বাড়ির মালিক অপেক্ষা করছেন। তার বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।
আটক কলেজছাত্রের স্ত্রী শারমিন খাতুন বলেন, শিক্ষক রফিকের কাছে ইংরেজিতে কথা বলা শিখতেন তার স্বামী। তিনি একটি কোচিং সেন্টার খুলতে চেয়েছিলেন। সে কোচিং সেন্টারে নামে তার স্বামীর কাছ থেকে একটি ফেসবুক পেজ খুলে নিয়েছেন। তার দাবি, তার স্বামীকে জোর করে থানায় নিয়ে এসে হাজতে রাখা হয়েছে। তার কোনো দোষ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, শহীদ আবু সাঈদের নাম ভাঙিয়ে ব্যবসা করলে আমরা তার বিরোধী। ওখানে কিছু একটা ‘মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং’ হয়েছে। সেটি আমার কাছে বেশি বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। আমি বিষয়টি দেখছি।
শিক্ষার্থীকে হাজতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাকে হাজতে রাখা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে তাকে নিয়ে আসা হয়। তার বিরুদ্ধে ছাত্ররা অভিযোগ তুলেছে।
রংপুর আদালতের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারে না। এ ধরনের গ্রেপ্তার আইন ও পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।