চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মো. সেলিম। পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং করতে ঢাকায় ফার্মগেটের একটি ছাত্রাবাসে ওঠে। তারপর ইউসিসিতে কোচিং করছিল। ফল প্রকাশের পর দেশের নামকরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে- এমনটা প্রত্যাশা ছিল তার। কিন্তু কথায় আছে- কপালের লিখন না যায় খন্ডন।
বুধবার ফল প্রকাশের পর সেলিম জানে সে ফেল করেছে। তার মাথার ওপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ল! এরপর আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত। চুপে চুপে গিয়ে বিষও জোগাড় করা হলো। তার আগে বাবা-মার উদ্দেশে একটি চিঠি লেখে সে। তাতে নিজের মৃত্যুর জন্য কাউকে দোষারোপ না করার অনুরোধ জানানো হয়। গর্ভধারণ ও জন্ম থেকে কষ্ট করে লালন-পালন করার জন্য মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানানো হয়।
এরপর চিঠিটি পকেটে রেখে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা। গুরুতর অবস্থায় সহপাঠিরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। চিকিৎসকদের মুখে সুস্থ হওয়ার আশ্বাস পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সহপাঠিরা। পরে তার পকেট থেকে পাওয়া চিঠি পরে সবাই জানতে পারেন সেলিম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।
সুমনের মতো এমন আরো অনেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল হয়েছে জেনে আত্মহত্যার চেষ্টা করে অসুস্থ্য হয়েছে। এখন তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- সুমা, উর্মি, লাবনি, সুরভি, রিয়া, শারমিন ও হিমেলসহ অন্তত ১০ জন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবক এ প্রতিবেদককে বলেন, জীবনের সব ক্ষেত্রে পাশ-ফেল থাকবেই। এটি জীবনেরই অংশ। সবারই প্রত্যাশা থাকে ভাল কিছু অর্জনের। তবে কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে হতাশ হয়ে জীবন বিসর্জন দেয়ার সিদ্ধান্ত একেবারেই অনুচিত। কারণ সামান্য কিছু পাওয়ার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক। নতুনবার্তা।