Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভুয়া সার্টিফিকেটে ২০ বছর শিক্ষকতা

বেগমগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সন্ধ্যা ভৌমিক ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে গত ২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। চাকরিতে যোগদানের সময় জমা দেয়া সকল সার্টিফিকেটই ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এতে অবস্থা বেগতিক দেখে সন্ধ্যা ভৌমিক ও তার স্বামী কাঞ্চন ভৌমিকের লোকজন প্রধান শিক্ষক, কমিটি ও স্কুলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সন্ধ্যা ভৌমিক সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে ১৯৯৪ সালে কুতুবপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরে ২০০২ সালে স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়। সে সময় তিনি দুই হাজার ৫৫০ টাকা থেকে শুরু করে বর্তমানে সরকারী স্কেলে ১১ হাজার টাকা ভোগ করছেন।

chardike-ad

index_48995স্কুলে যোগদানের সময় দেয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, ১৯৯৫ সালে তিনি বিএ (পাস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। যার রেজি: নং-২৫৮৪।  ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি বিএড কোর্সে ভর্তি হন। তাছাড়া বিএ পাশের আগে বিএড কোর্সে ভর্তি হওয়ার কোন নিয়ম বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাবোর্ডে নেই। এতে বুঝা যায় সন্ধ্যা ভৌমিকের বিএ (পাস) পরীক্ষার ও বিএড পরীক্ষার সার্টিফিকেটে গড়মিল রয়েছে।

সন্ধ্যা ভৌমিকের নামে ২০১২ সালের ৭ নভেম্বর বিএড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মূল সনদ ইস্যু করা হয়। প্রথম সনদে গরমিল দেখা দেওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি তিনি বোর্ড থেকে আরেকটি মূল সনদ সংগ্রহ করেন। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে তার দেয়া দুটি সার্টিফিকেটে উপাচার্যের স্বাক্ষর দুই রকম পাওয়া যায়। কিন্তু বোর্ডে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সময় বোর্ডে একজনই ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। তাছাড়া কুতুবপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সন্ধ্যা ভৌমিকের নামে ইস্যুকারী আবদুর রব নামের কোন প্রধান শিক্ষক কখনো উক্ত বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এখনো পর্যন্ত ওয়েজ বোর্ডে বা কাগজে কলমে আবদুর রব নামের প্রধান শিক্ষকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে সন্ধ্যা ভৌমিকের নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে স্কুল কমিটির লোকজন ও এলাকাবাসীর মাঝে।

সন্ধ্যা ভৌমিকের এ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ধ্যা ভৌমিক ও তার স্বামী কাঞ্চন ভৌমিক স্কুল কমিটির লোকজন ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। একের পর এক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সম্বলিত অভিযোগ করছে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। তাদের এই কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী হতবাক। এত বছর ধরে সরকারি টাকা আত্মসাতকারী সহকারী শিক্ষিকা সন্ধ্যা ভৌমিক ও তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে জানতে সহকারী শিক্ষিকা সন্ধ্যা ভৌমিকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।  স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু নাছের জানান, সনদপত্রে গড়মিলের কারণে সন্ধ্যা ভৌমিককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। খবর-শীর্ষনিউজ।