Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

তরুণীদের অপহরণ করাই ছিল ওদের পেশা

রাজধানীতে সাদা প্রাইভেট কার ব্যবহার করে তরুণীদের অপহরণ করাই ছিল ওদের পেশা। অপহরণের পর সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে নির্যাতন চালাত ভয়ঙ্কর এ অপরাধী চক্রটি। এ কাজে কেউ বাধা দিলে গুলি করে হত্যা করা হতো। অপকর্মের জন্য ছিল নিজেদের গাড়ি ও অস্ত্র। রাজধানীর ভয়ঙ্কর এ চক্রের প্রধান ছিল আপন ওরফে গিয়াস উদ্দিন। গত ১৮ জুলাই দলনেতা আপন ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর ভয়ঙ্কর গ্রুপটির নেতৃত্বে আসে সোহেল রানা।

sohel ranaডিবি পুলিশ সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার করলে অপরাধকর্মের নানা তথ্য জানায় সে। আপন নিহত ও সোহেল গ্রেফতার হলেও চক্রের আরও চার সদস্য আল আমিন, শফিক, রনি ও শিমুল পলাতক।তরুণীদের অপহরণ করাই ছিল ওদের পেশা ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা জানিয়েছে, দলনেতা আপন জীবিত থাকাকালে তারা গাড়িতে করে অন্তত অর্ধশত অপহরণ ঘটনা ঘটিয়েছে। তরুণীদের গাড়িতে তুলেই চোখ বেঁধে ফেলায় তারা চিনতে পারত না। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের চোখ বেঁধেই নামিয়ে দেওয়া হতো। ফলে তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগও দিতে পারেনি। এ ধরনের প্রতি কাজে আপন তাদের তিনশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা দিত।ডিবি পুলিশ জানায়, আপন ও সোহেলের চক্রটি বিভিন্ন সময় রাজধানীতে ন্যক্কারজনক অপরাধ কর্মকাণ্ড করে এলেও গত ৩ জুলাই রাতে উত্তরার ঘটনায় তারা নজরে আসে। ওই রাতে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের রাস্তা থেকে এক তরুণীকে অপহরণের সময় পাশের একজন নিরাপত্তাকর্মী বাধা দেন। লিয়াকত হোসেন লিটন নামের ওই নিরাপত্তাকর্মীকে তারা গুলি করে হত্যার পর তরুণীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। যদিও ওই রাতেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টানা অভিযানের মুখে চক্রটি তরুণীকে ছেড়ে দেয়। ওইদিন সন্ধ্যায় তারা আরও এক তরুণীকে অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছিল।

chardike-ad

ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এসএম নাজমুল হক জানান, এ চক্রটি রাজধানীতে ভয়ঙ্কর ও ন্যক্কারজনক অপরাধ কর্মকাণ্ড করে আসছিল। মান-ইজ্জতের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগও করত না। তবে বন্দুকযুদ্ধে দলনেতা আপন নিহত হওয়ার পর চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে ডিবি পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় ৯ সেপ্টেম্বর সোহেল রানাকে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উত্তরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সে তথ্য দেয়। সোমবার সে নিজের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে।জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা জানিয়েছে, আপন নিহত হওয়ার পর নিজে গ্রুপটিকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছিল। তবে উত্তরায় নিরাপত্তাকর্মী খুন হওয়ার পর তারা বিছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্দুকযুদ্ধে আপন নিহত হওয়ার পর দলের সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। সোহেল জানায়, তারা আপনের নিজের সাদা রঙের প্রাইভেট কার নিয়ে রাজধানীর উত্তরা, ধানমণ্ডি, গুলশান ও বনানী এলাকায় ছিনতাই কার্যক্রম চালাত। এক পর্যায়ে আপন রাতে রাস্তা থেকে তরুণীদের গাড়িতে তুলে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিত। আর ওই কাজগুলোই তাদের কাল হয়ে দাঁড়ায়।