গাজীপুরে পুত্রের দেয়া আগুনে রোববার পিতা পুড়ে মারা গেছেন। নিহতের নাম আব্বাস আলী (৫৫)। তিনি সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামের মাস্টারপাড়া এলাকার মাইনউদ্দিনের ছেলে।
ঘটনার পর থেকে ছেলে দিদারুল ইসলাম (২২) পলাতক রয়েছে। আগুনে আব্বাস আলী ছাড়াও একটি ছাগল ও কয়েকটি মুরগী পুরে মারা গেছে।
পিরুজালী ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল ইসলাম জানান, আব্বাস আলীর ছেলে দিদারুল ইসলাম (২২) তার বাবার কাছে বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা দাবি করে আসছিলেন। বিদেশ যেতে দিদারুল কিছু টাকা জমা দিলেও তার আরো টাকা প্রয়োজন ছিল।
সম্প্রতি ওই টাকা চেয়েও না পাওয়ায় মা ও বাবার সঙ্গে ছেলের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। শনিবারও ওই টাকা নিয়ে বাবা-ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। পরে রোববার ভোর রাত দেড়টার দিকে দিদারুল তার মা ও বোনের ঘরে বাইরে থেকে ছিটকানী আটকিয়ে পাশের ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত বাবার বিছানায় পেট্রোল বা কেরোসিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ও পালিয়ে যায়।
এ সময় আব্বাস আলী ডাক চিৎকার শুরু করলে পড়শিরা গিয়ে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে ও ঘরের আগুন নেভায়। আগুনে ঘরে থাকা একটি ছাগল ও কয়েকটি মুরগী ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং আব্বাস আলীও মারাত্মকভাবে দ্বগ্ধ হন।
পরে এলাকাবাসী আব্বাস আলীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে গাজীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হায়দার আলী জানান, রোববার সকাল ৬টার দিকে আব্বাস আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জয়দেবপুর থানার হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন-উর রশিদ জানান, নিহতের গ্রামের বাড়ি শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের বারতোপা এলাকায়। বিয়ের পর থেকে তিনি স্ত্রী-কণ্যা নিয়ে পিরুজালীর শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। সম্প্রতি জমি বিক্রির কিছু টাকা তারা মা-বাবার কাছে দাবি করে আসছিল ছেলে দিদারুল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার সকালে স্ত্রী দুফুলা বেগমকে (৪৫) আটক করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ।