Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চলে গেলেন ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন

abdul matinভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন আর নেই। বুধবার সকাল নয়টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

গত ১৮ আগস্ট আবদুল মতিনকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার স্ট্রোক করেছিল। এর এক দিন পরই আবদুল মতিনকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। ২০ আগস্ট তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করেন নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আফজাল হোসেন। অস্ত্রোপচারের পরও তার অবস্থা অনেকটা অপরিবর্তিতই ছিল। এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে মারাত্মক অবনতি ঘটে তার। বিএসএমএমইউতে ভর্তির পর থেকেই তিনি নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

chardike-ad

আব্দুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ধুবালীয়ায় এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আব্দুল জলিল এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন তাদের প্রথম সন্তান।

জন্মের পর তার ডাক নাম ছিল গেদু। ১৯৩০ সালে গ্রামের বাড়ি যমুনা ভাঙনে ভেঙে গেলে আবদুল জলিল জীবিকার সন্ধানে ভারতের দার্জিলিং এ চলে যান। সেখানে জালাপাহারের ক্যান্টনমেন্টে সুপারভাইস স্টাফ হিসেবে একটি চাকরি পেয়ে যান।

১৯৩২ সালে আব্দুল মতিন শিশু শ্রেণীতে দার্জিলিং-এর বাংলা মিডিয়াম স্কুল মহারাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন এবং তখন সেখানেই তার শিক্ষা জীবনের শুরু। ১৯৩৩ সালে আব্দুল মতিনের মাত্র আট বছর বয়সে তার মা অ্যাকলেমশিয়া রোগে মারা যান। মহারানী গার্লস স্কুলে ৪র্থ শ্রেণী পাস করলে এখানে প্রাইমারি স্তরের পড়াশোনার শেষ হয়।

এরপর ১৯৩৬ সালে দার্জিলিং গভর্মেন্ট হাই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৩ সালে এনট্রেন্স (Secondary Certificate Examination) পরীক্ষায় ৩য় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। ছেলে দার্জিলিং এ ভালো কোনো কলেজে ভর্তি হোক বাবা তা চাইলেও আব্দুল মতিন ১৯৪৩ সালে রাজশাহী গভর্মেন্ট কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষে ভর্তি হলেন। দুই বছর পর ১৯৪৫ সালে তিনি এইচ এস সি পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে আব্দুল মতিন বৃটিশ আর্মির কমিশন র‌্যাঙ্কে ভর্তি পরীক্ষা দেন।

দৈহিক আকৃতি, উচ্চতা, আত্মবিশ্বাস আর সাহসিকতার বলে তিনি ফোর্ট ইউলিয়াম থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কমিশন পান। এরপর তিনি কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে পৌছান। কিন্তু ততদিনে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। ফলে তিনি একটি সার্টিফিকেট নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসেন।

দেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি ১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব আর্টস (পাস কোর্স) এ ভর্তি হলেন। ফজলুল হক হলে তার সিট হয়। ১৯৪৭ সালে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ করেন এবং পরে মাস্টার্স করেন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন বিভাগ থেকে। নতুনবার্তা।