Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জাহাজ আসলেই দুইপ্রান্ত খুলে যায় যে ব্রিজের

draw-bridgeআমরা সাধারণত সে সেতুগুলো দেখি যেগুলো স্থির। কিন্তু বিশ্বের কিছু জায়গাতে এমন কিছু সেতু আছে যেগুলো নড়াচড়া করতে পারে। আসলে এই সেতুগুলো প্রয়োজনের স্বার্থেই এমন করা হয়েছে। যেমন, ইংল্যান্ডের টেমস নদী দিয়ে কোনো জাহাজ অথবা ফিশিং বোট চলতে গেলে নদীটির উপরে থাকা সেতুটি নিজে থেকে সরে যায়। আর সেই জাহাজ ব্রিজের অংশটুকু পার হয়ে যাবার পর সেটি আবার জোড়া লেগে যায়।

নড়াচড়া করতে পারা সেতু আমরা সেগুলোকেই বলব যেগুলো জলযানগুলোকে তাদের নিচ দিয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরে যায়। নানা ধরনের সেতুগুলোর মধ্যে একটি হলো টানা-সেতু বা ড্রব্রিজ।

chardike-ad

ড্রব্রিজ বা টানা সেতু, যে সমস্ত সেতুকে একপাশ হতে দড়ির সাহায্যে টেনে অন্য মাথায় তুলে ফেলা হয় সেই সমস্ত সেতুকে ‘টানা-সেতু’ বলা হয়ে থাকে। তবে মনে করার কোন কারণ নেই, এই টানা সেতু বা ড্র ব্রিজ আধুনিক কোন ব্যাপার, হ্যা আধুনিকায়নের ফলে, প্রযুক্তির ব্যবহারে এর বিশালত্ব বেড়েছে , তবে আদিকাল থেকেই এইসব টানা-সেতুর ব্যবহার দেখা যায়। তবে সেই সময় টানা সেতুগুলো ছোট আকারের ছিল, তবে একই প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হত সেই সমস্ত সেতুতে। সেই সময়ে টানা সেতুগুলো ব্যবহার করা হতো দুর্গগুলোতে। দুর্গের চারপাশে পরিখা খনন করে পরিখার নিচে চোখা চোখা লৌহদণ্ড অথবা কাষ্টদণ্ড পুঁতে রাখা হতো। আবার সেই পানিতে কুমির বা বিষাক্ত সাপও ছেড়ে রাখা হতো। সেই পরিখার উপর দিয়া দুর্গের প্রবেশদ্বারে এই টানা-সেতু স্থাপন করা হতো। এগুলোকে ‘দুর্গ টানা-সেতু’ বলা যায়। তাছাড়া বড়বড় প্রাসাদেও এই ধরনের ‘টানা সেতুর’ ব্যবহার দেখা যায়।

আদিকালেই এইসব ‘টানা-সেতুর’ ব্যবহার শেষ হয়ে গিয়েছে এমন ভাবাটা ঠিক না। এখনও এই টানা সেতুর ব্যবহার দেখা যায়। তবে নদী বা খালের ক্ষেত্রে। যেমন, ‘স্নাউয়ারহফবার্গ’ সেতুটি নেদারল্যান্ডে অবস্থিত।

ঠিক এমনই এক বিশাল ড্রব্রিজ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলোনার তীরে। ব্রিজের কাছাকাছি কোন বিশাল জাহাজ আসলেই এই ব্রিজ দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়, সেই জাহাজ ব্রিজটি পার হয়ে গেলে, আবারো জায়গামত লেগে যায় বিশাল এই ব্রিজটি।

কিভাবে কাজ করে নর্থ ক্যারোলোনার ড্রব্রিজ :

ওজনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে কাজ করে এই ড্রব্রিজটি। ব্রিজটির নীচে দুইপাশে দুটি ১০০ টন ওজনের কংক্রিটের ব্লক আসে, ছোট্ট দুইটি বৈদ্যুতিক মোটরের সাথে গিয়ার লাগিয়ে অতি ধীরে ধীরে এই বিশাল ওজনের কংক্রিটের ব্লক নীচের দিকে নামানো হয়, আর এর ফলে ব্রিজটি উপরের দিকে ওঠা শুরু করে, খুব ছোট দুইটি মোটর ব্যবহার করা হয়, কারন দ্রুত ব্রিজটি উঠানো নামানো করা হলে সেক্ষেত্রে ব্রিজের কাঠামোতে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে। আর ব্রিজ নামানোর সময় আবারো ধীরে ধীরে ব্রিজের তলার বিশাল ওজনের কংক্রিট ব্লকটি আগের অবস্হানে আনা হয়। আর অবশ্যই ব্রিজ উঠানো নামানোর সময় গাড়ী তার উপর দিয়ে চলতে পারে না।