Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাস ও অপরাধ বৃদ্ধি, বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ

DUঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় বেড়াতে আসা বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহক ইমতিয়াজ আলম বেগ ও তার দুই ভাগ্নীর উপর হামলাকারী চার ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ আলী নিশ্চিত করেছেন। বহিষ্কৃতরা হলেন- উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ফারুক হোসেন, পদার্থ বিদ্যা বিভাগের মাসুম, পরিসংখ্যানের জিসান এবং গণিত বিভাগের জহিরুল ইসলাম।  এরা সবাই প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং শহিদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলামের কেডার।

chardike-ad

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর বেগ আর্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইমতিয়াজ আলম বেগ কানাডা প্রবাসী এক ভাগ্নী ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের কর্মরত আরেক ভাগ্নীকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় ঘুরতে আসেন। এক পর্যায়ে শহীদুল্লাহ হলের পুকুর ঘাটে পাশে বসে থাকার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে চার শিক্ষার্থী তাদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এই ঘটনায় লাঞ্ছিতরা অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।  এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে শাহবাগে একটি এবং নীলক্ষেতে আর একটি পূর্ণাঙ্গ থানা রয়েছে। ক্যাম্পাসে রয়েছে একাধিক পুলিশ ফাঁড়ি,  রয়েছে  পুলিশের গাড়ী, টহল পুলিশের বিচরণ। এছাড়া, রয়েছে দেশের সবগুলো গোয়েন্দা সংগঠনের সদস্যদের সার্বক্ষণিক অবস্থান। এ অবস্থায় দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ বলে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে প্রায়ই অপরাধ বা অসামাজিক কর্মকাণ্ডের খবর শুনে যে কোন সুস্থ নাগরিক বিচলিত না হয়ে পারেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে অপরাধ প্রবণতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন রেডিও তেহরানকে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেশের মানুষের  প্রত্যাশা অনেক বেশী। এখান থেকে মানুষ ভালো খবর পেতে চায়।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মো. মফিজুর রহমান বলেন,অবস্থানগত কারণেই ক্যাম্পাস একটি অবাধ বিচরণ স্থলে পরিণত হয়েছে। তাই,পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আরো বেশী দায়িত্বশীল হতে হবে।

তিনি মনে করেন, শুধু ছাত্রদের দোষ দিলে হবে না, তাদের যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য স্ব স্ব বিভাগ ও হল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নিয়মিত শলা-পরামর্শও  করতে হবে।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ হলগুলোতে বর্তমানে কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রলীগের দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আজ ঢাকার একটি অনলাইন পত্রিকায় খবর দেয়া হয়েছে।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বাস্তবে  হলের খবরদারির দায়িত্ব এখন ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে। হলে কারা উঠবে, কে থাকবে, হলের কি হবে না হবে সব কিছুই এখন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই ঠিক করছে। ফলে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

কর্তৃপক্ষের কেউ ছাত্রলীগের সঙ্গে মানিয়ে কাজ করতে আপত্তি করলে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, আন্দোলন এবং হল ভাঙচুর করে রীতিমত হট্টগোল বাধিয়ে দেয় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রকর্মীরা। কখেনো বা শিবির-জামায়াত বা জঙ্গী বলে  আক্রমণ চালানো হয়।

গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলে প্রভোস্টের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে ছাত্রনেতাদের আন্দোলন করতে দেখা গেছে। এটা যে শুধু প্রভোস্টের দুর্নীতি বা দায়িত্বে অবহেলার কারণে করা হয়েছে তা নয়, এর পেছনে ছাত্রনেতাদের স্বার্থ হাসিল না হওয়ার কারণও রয়েছে।

সর্বশেষ গত ১৩ আগস্ট অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলন এবং হলে ভাঙচুর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের নেতারা। পরে অবশ্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে প্রভোস্টের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। রেডিও তেহরান।