Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

চরম কষ্টে দিন কাটছে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীদের

labor

উপসাগরের তেলসমৃদ্ধ দেশ কাতারে বাংলাদেশী শ্রমিকদের দিন কাটছে চরম কষ্টের মধ্যে। চুক্তি মোতাবেক ৮ ঘণ্টা ডিউটি করানোর কথা। কিন্তু বেশির ভাগ কর্মীকে ১২-১৪ ঘণ্টা ডিউটি করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওভারটাইম দেয়ার কথা থাকলেও কোম্পানি তা-ও দিচ্ছে না। কাতারে একটি দু’টি নয়, ৮০ শতাংশ কোম্পানিতে বিরাজ করছে এমন অবস্থা। দীর্ঘ দিন ধরে কষ্টে থাকা শ্রমিকেরা বলছেন, কোম্পানির মালিক ও তাদের প্রতিনিধিদের বারবার জানানোর পরও তারা অদ্যাবধি শ্রমিকদের বেতন ও ওভারটাইম দেয়ার ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই ও এসবি কোম্পানিসহ কিছু কোম্পানি শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন বোনাস দিচ্ছেন।

chardike-ad

গতকাল শুক্রবার কাতারের পাওয়ার লিংক কোম্পানির সানাইয়া ৫২ ও আলঘোর ক্যাম্পে কর্মরত একাধিক বাংলাদেশী শ্রমিক নাম না প্রকাশ করে নয়া দিগন্তকে টেলিফোনে জানান, তারা এখানে আসার পর থেকেই চুক্তি মোতাবেক বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। এরই মধ্যে কোম্পানিতে তাদের চার মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। আগামী ২৮ জানুয়ারি কোম্পানির মালিক বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে বলে কথা দিয়েছে। তারা বলেন, বেতন না পাওয়ার কারণে বাড়িতে টাকা পাঠানো দূরের কথা তাদের অনেকের এখন ধারদেনা করে নিজেদের জীবন বাঁচাতে হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন তাদের কষ্ট করে চলতে হবে তা তারা কেউ বলতে পারছেন না।

ঢাকার রাব্বী ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সাত-আট মাস আগে পাড়ি জমানো শ্রমিকদের একজন জানালেন, রিক্রুটিং এজেন্সি রাব্বী ইন্টারন্যাশনালের মনোনীত বসুন্ধরা ট্রেনিং সেন্টারে ট্রেনিং দেয়ার সময় বলেছিল কাতারের কোম্পানিতে তাদের ৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবে। বেতন হবে ৮০০ রিয়াল। থাকা কোম্পানির, খাওয়া নিজের। কিন্তু কাতারে আসার পর কোম্পানি দিনে ৮ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টা থেকে ১৪-১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করাচ্ছে। ওভারটাইমের কথা বললে তারা এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ চুক্তিতে ওভারটাইম দেয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে পাওয়ার লিংক কোম্পানিতে বাংলাদেশী, নেপালিসহ বিভিন্ন দেশের সহস্রাধিক কর্মী কাজ করছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের সমস্যার কথা রাব্বী ইন্টারন্যাশনালের মালিককে জানিয়েছে। তিনি বলছেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। কোনো সমস্যা নেই। এক প্রশ্নের উত্তরে কাতারের প্রতিষ্ঠিত ওই কোম্পানিতে কর্মরত শ্রমিক ফারুক, সামিউল, গাফফার বলেন, কাতারে আসার জন্য তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করে এসেছি। কিন্তু এখন ঠিকমতো বেতনই পাচ্ছি না। চিন্তা করছি কতদিনে আমাদের পুঁজির টাকা উঠবে? তবে তাদের মতে ইলেকট্রনিকস কোম্পানি পাওয়ার লিংকের শ্রমিকেরা শুধু কষ্টে আছেন তা কিন্তু নয়, এখানে যদি ১০০ ফ্যাক্টরি থাকে তার মধ্যে ৮০টি কোম্পানিতেই বেতন ভাতার সমস্যা বিরাজ করছে। কিন্তু দূতাবাসের কেউ এসব ব্যাপারে খোঁজ নেয়ারও সময় পাচ্ছেন না বলে তারা অভিযোগ করেন।

শ্রমিকদের সমস্যার ব্যাপারে কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি টেলিফোন ধরেননি।