Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিশ্বকাপে ভারত পাকিস্তান ম্যাচ আজ

world cup 2015বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে পাঁচবার। প্রতিবারই জয় তুলে নিয়েছে ভারত। ২৩ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রথম মোকাবেলা। এর পর বেঙ্গালুরু, ম্যানচেস্টার, সেঞ্চুরিয়ান হয়ে মোহালিতেও ভারতরহস্য ভেদ করতে পারেনি পাকিস্তান। অ্যাডিলেডের ওভালে আজ ষষ্ঠ লড়াইয়ে ভারত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে নাকি পাকিস্তান নতুন ইতিহাস গড়বে, তারই রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

‘ভারতকে হারানোটা হবে বিশ্বকাপ জয়ের চেয়ে বড় উপলক্ষ’— অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির এ কথায়ই স্পষ্ট পাকিস্তান শিবিরের মনোভাব। ‘বিশ্বকাপে ভারতের কাছে যথেষ্ট হার হয়েছে; এটা কাটিয়ে ওঠা জরুরি’— কিছুদিন ধরে এমন কথা বলছেন পাকিস্তানি গ্রেটদের প্রায় সবাই।

chardike-ad

বিশ্বক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত এ ম্যাচের আগে সবদিক থেকেই সুবিধাজনক অবস্থায় ভারত। অতীত ইতিহাসের সঙ্গে তিন মাস ধরে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করায় কন্ডিশনও তালুর মতো চেনা হয়ে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। ইয়ান চ্যাপেল, শেন ওয়ার্নের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারও এগিয়ে রাখছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

অতীত টানলে এগিয়ে থাকছে ভারতই। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিচারে পরিষ্কার ফেভারিট বলা যাচ্ছে না কাউকেই। তিন মাস অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করলেও ভারত প্রথম জয়ের মুখ দেখেছে এই সেদিন, প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে। এদিকে ইনজুরি ও আইসিসির নিষেধাজ্ঞা মিলিয়ে বেশ নাজুক অবস্থায় পাকিস্তানও। সাইদ আজমল নেই। চোটের কারণে দলের বাইরে মোহাম্মদ হাফিজও। ইনজুরির কারণে আগেই ছিটকে গেছেন উমর গুল। সুইং স্পেশালিস্ট জুনাইদ খানের সার্ভিসও পাচ্ছে না পাকিস্তান। সব মিলিয়ে ব্যাকফুটে থেকেই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে দুই দলই।

এমন বাস্তবতায় পাকিস্তানের জন্য বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন ভারতের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তান কোনো দলই সেরা ফর্মে নেই। ফিটনেস সমস্যার সঙ্গে ভারতীয়দের ধারাবাহিকতার অভাব আছে। বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে এটিই পাকিস্তানের মোক্ষম সুযোগ হতে পারে।’

সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেলের ফেভারিট ভারত। তার ভাষায়, ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, জাভেদ মিয়াদাঁদের মতো তারকা নিয়েও ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। বর্তমান দলে তাদের মানের ক্রিকেটার নেই, বিশেষ করে বোলিংয়ে। জুনাইদ খানকে হারানোটা পাকিস্তানকে অনেকটাই পেছনে ঠেলে দেবে। আমার মতে, ফেভারিট হিসেবে ম্যাচটা শুরু করবে ভারত।

শিষ্যদের জাগিয়ে তুলতে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ০-৫ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার বিষয়টাকেই পুঁজি করছেন পাক কোচ ওয়াকার ইউনুস। বলেছেন, ‘আমরা ইতিহাস বদলাতে চাই, খেলতে চাই ভালো ক্রিকেট। দলগতভাবে উন্নতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে সবাই।’ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় ১৯৯৬ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে সাবেক এ দুনিয়া কাঁপানো ফাস্ট বোলারের।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতার উত্তাপ সতীর্থদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন গত বিশ্বকাপজয়ী ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। তার কথায়, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে জিরো থেকে হিরো হয়ে ওঠার ভালো প্লাটফর্ম। কেননা এ ম্যাচের দিকে দৃষ্টি থাকে সবার। যোগ করেন, ‘আমি অতীত ভুলে থাকতে চাই। লম্বা সময় ধরে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছি, এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি।’

ফিটনেস-সংক্রান্ত সমস্যাকে উড়িয়ে দিয়ে ক্যাপ্টেন কুল জানাচ্ছেন, ‘আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, দলের ১৫ ক্রিকেটারই ফিট এবং একাদশে জায়গা নেয়ার জন্য প্রস্তুত।’ বিশ্বকাপে ভারতের অতীত রেকর্ড নিয়েও খুব বেশি আগ্রহ নেই ধোনির, ‘অতীত রেকর্ড নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। পরিসংখ্যান নিয়ে আমি মোটেও ভাবছি না। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ঘটিয়ে ভালো খেলতে হবে, এটাই আসল কথা।’

পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ উল হক ম্যাচটাকে দেখছেন ইতিহাস গড়ার মঞ্চ হিসেবে। বলেছেন, ‘আমাদের সামনে ইতিহাস গড়ার সুযোগ। পাকিস্তান-ভারত লড়াইয়ে বরাবরই প্রচণ্ড চাপ থাকে। ইতিবাচক দিক হচ্ছে, আমরা ম্যাচটা উপভোগ করতে চাই।’