Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বাড়ছেঃ হুমকির মুখে কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ লক্ষমাত্রা

মো. মহিবুল্লাহ, ১৬ ফেব্রুয়ারীঃ

বিদ্যুৎ খাতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে দেশটির দেয়া পূর্ব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে অনেক বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন করছে এমন বেশ কয়েকটি সংগঠন এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

chardike-ad

জানুয়ারী মাসে কোরিয়া সরকারের অর্থনৈতিক তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক প্রকাশিত দীর্ঘমেয়াদী শক্তি উৎসের খসড়া নীতিমালায় ২০১৭ সাল নাগাদ এলএনজি প্ল্যান্ট ব্যবহারে অতিরিক্ত ৫.০৬ মিলিয়ন কিলোওয়াট এবং কয়লা চালিত কেন্দ্রগুলো থেকে ২০২০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১০.৭৪ মিলিয়ন কিলোওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করে  এ খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ও যথেষ্ট মানসম্মত নয় এমন বেশ কিছু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জ্বালানী সংকটে পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এছাড়া ২০১১ সালে জাপানে পারমাণবিক সংকট থেকে সৃষ্ট   ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দক্ষিণ কোরিয়াতেও পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জোর দাবী ওঠে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই বিকল্প উৎসের ব্যবহার বাড়াতে হচ্ছে বলে বলছেন পরিকল্পনা সংশ্লিষ্টরা।

২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ২০২০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে। সমালোচকরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানীর উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে সরকারের ঘোষিত নতুন শক্তি উৎপাদন পরিকল্পনা সে প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ বিপরীত। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিশ্লেষণ অনুসারে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা আগামী সাত বছরে প্রায় দশ শতাংশ বেড়ে যাবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন এর ফলে কোরিয়া সরকার তাঁদের সেচ্ছায় করা অঙ্গীকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হবে যা আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশটির সুনাম ক্ষুণ্ণ করবে।

অর্থনৈতিক তথ্য মন্ত্রণালয় অবশ্য বলছে, জ্বালানীর ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রাটাই অবাস্তব ও উচ্চাভিলাষী। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, দীর্ঘমেয়াদী নতুন পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলে সাধারণ জনগণ ভুক্তভোগী হবে। একজন কর্মকর্তা বলেন, যে সময়ের প্রেক্ষিতে এ লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছিল সে তুলনায় বর্তমান চাহিদা ও প্রেক্ষাপট অনেকটাই ভিন্ন এবং সামনের বছরগুলোতে চাহিদা আরও বাড়বে। জ্বালানীর স্বাভাবিক চাহিদা মিটিয়ে ২০২০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা অসম্ভব বলেই মনে করছেন ওই কর্মকর্তা।

তবে পরিবেশ আন্দোলনের সাথে জড়িত এক কর্মী অভিযোগ করেন, সরকার চাহিদার ব্যাপারটি অতিরঞ্জিত করে প্রচার করছে। বাস্তব অবস্থা এতটা শোচনীয় নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
(ইন্টারনেট অবলম্বনে)