Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ’

study-usaবাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণা শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার (ইউসি) বার্কলে বিদ্যায়তন। এ লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ‘সুবির অ্যান্ড মিলানি চৌধুরী সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’ গবেষণাকেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতি, সামাজিক সমস্যার সমাধানে অ্যাপ তৈরি এবং ফল ও সবজিতে পাওয়া জীবাণু প্রতিরোধে তথ্য সংগ্রহ করবে তারা।

৩০ মার্চ এ বিদ্যায়তনের ‘ইনস্টিটিউট ফর সাউথ এশিয়া স্টাডিজ’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন ইউসির চ্যান্সেলর নিকোলাস ডার্কস। এ অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের নীরব বিপ্লব’ শিরোনামের প্রবন্ধের ওপর বক্তব্য রাখবেন বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী স্যার ফজলে হাসান আবেদ।

chardike-ad

ইউসির চ্যান্সেলর নিকোলাস ডার্কস বলেন, ‘এ কেন্দ্রের মাধ্যমে ইউসি বার্কলে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষণা ও বৃত্তি প্রদানে জোর নেতৃত্ব দিতে পারবে। এতে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে সাহায্য করবে।’

ডার্কস আরো বলেন, ‘এ গবেষণা কেন্দ্র কোনো সীমারেখা না মেনে নিজেদের অধ্যয়ন অব্যাহত রাখবে এবং সমস্যার সমাধানে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।’

চৌধুরী কেন্দ্রের পরিচালক সঞ্চিতা সাক্সেনা দক্ষিণ এশিয়ার আর্থ-সামাজিক গবেষক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। স্যার আবেদ কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন জানিয়ে সঞ্চিতা বলেন, ‘আবেদের স্বপ্ন ও উদ্ভাবন দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করেছে, যা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে আশায় জাগিয়েছে। ইউসি বার্কলের এ কেন্দ্রের গবেষণার ফল আরো গবেষণা ও বৃত্তি প্রদানে উৎসাহিত করবে। বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে এটা সহায়ক হবে।’

মান ব্যবস্থাপনা কৌশল ও পদ্ধতি নিয়ে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বে তাত্ত্বিক নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন চট্টগ্রামের সুবীর চৌধুরী। স্নাতক সম্পন্ন করার জন্য ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তিনি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এএসআই কনসাল্টিং গ্রুপের প্রধান নির্বাহী। তাঁর স্ত্রীর নাম মালিনি। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণার জন্য এই গবেষণা কেন্দ্রকে ১০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ সাহায্য দিয়েছেন সুবীর।

সুবীর চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের বাইরে আমাদের দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিয়ে গবেষণায় প্রথম প্রতিষ্ঠান। এ কেন্দ্র একটি স্বাধীন বৈশ্বিক মুখপাত্র হিসেবে রূপ লাভ করবে, যা বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

বাংলা ভাষা নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে ১৯৯৩ সাল থেকে সুবির চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করছেন ইউসি বার্কলের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের (দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) চেয়ারম্যান রাকা রায়। সুবীর ও রাকার প্রায় দুই দশকের প্রচেষ্টার পর এ গবেষণা কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করতে যাচ্ছে।

সুবীর বলেন, ‘আগে আমার টাকা ছিল না। তবে টাকা-কড়ি হলে বাংলাদেশের কল্যাণে বড় কিছু করার অঙ্গীকার ছিল।’

এই কেন্দ্রের হয়ে বাংলাদেশে কাজ করার জন্য গবেষক নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঢাকার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি দুটি গবেষণা পরিচালনা করবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে গবেষণা। অন্যটি, ব্যবসায় নারীর ভূমিকা পর্যবেক্ষণ। আর সামাজিক সমস্যা সমাধানে ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ তৈরিতে কাজ করবে টেকনোহ্যাভেন নামে ঢাকার একটি সফটওয়্যার ও সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন কোম্পানি।

শীর্ষ স্বাস্থ্য গবেষক ক্যাটলিন কুক ঢাকায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সঙ্গে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কাজ করবেন। তিনিও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশের গবেষকদের প্রশংসা করে কুক বলেছেন, ‘সত্যিই আমি বাংলাদেশি গবেষকদের কাজের মান দেখে মুগ্ধ।’

ইউসি বার্কলের বাংলাদেশ স্টাডিজ সেন্টার বিভিন্ন কর্মসূচি ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করবে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তা করা হবে। পাশাপাশি সুবীর চৌধুরীর এলাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনেও এ ধরনের শিক্ষা কর্মসূচি থাকবে।