Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার

jugshankhaজঙ্গি দমনের নামে মিয়ানমারে ভারতের সামরিক অভিযানের ঘটনা নিয়ে দেশ বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ভারতীয় এই অভিযান নিয়ে প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তান কড়া সমালোচনা করেছে। এই অভিযানের পর পাক-ভারত সীমান্তেও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় পত্রিকাগুলো এ ঘটনা নিয়ে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

আজ রবিবার বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে আসাম থেকে প্রকাশিত ভারতীয় বাংলা দৈনিক যুগশঙ্ঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ‘উত্তর -পূর্বের জঙ্গি নিমূলে এবার অভিযান বাংলাদেশে’ এই শিরোনামে প্রকাশিত রির্পোটে নানা বিতর্কিত বিষয় স্থান পেয়েছে।

chardike-ad

পত্রিকাটির গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় ও শিলচর এডিশনের প্রধান শিরোনাম ছিল এরকম-‘উত্তর-পূর্বের জঙ্গি নির্মূলে এবার অভিযান বাংলাদেশে’।

পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মাটিকে কিছুতেই উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গিদের মুক্ত বিচরণ ক্ষেত্র হতে দেওয়া হবে না বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঢাকা। সেই প্রতিশ্রুতি মতো বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে থাকা উত্তরপূর্বাঞ্চলের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুক্রবার থেকে জঙ্গি-বিরোধী যে অভিযান শুরু হয়েছে, শনিবার দ্বিতীয় দিনে তা আরও তীব্রতর হয়েছে। ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) প্রতিবেশী বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের সত্যতা স্বীকার করেছে। বিএসএফ বলেছে, উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের উৎখাত করতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী।

শনিবার শিলংয়ে বিএসএফের আইজি (মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার) সুদেশ কুমার সাংবাদিকদের বলেন,‘বাংলাদেশের মাটিতে আত্মগোপনকারী উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানকে আজ আরও তীব্রতর করে তোলা হয়েছে।

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে ঘাঁটি করে উত্তর-পূর্বের জঙ্গিরা বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এদের অপরাধী হিসাবে বিবেচনা করে অভিযান শুরু করেছে।

বিএসএফের এই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের গভীর অরণ্যে উত্তর-পূর্বের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলির বেশ কিছু গোপন শিবির রয়েছে। শিবিরে আত্মগোপনকারী জঙ্গিদের গতিবধি নজর রাখতে বিএসএফ এবং বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-এর মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান হচ্ছে নিয়মিত।

যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সীমান্তে সম্প্রতি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সাফাই অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। বিদেশের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ভারতীয় জঙ্গিদের উৎখাতে বর্তমানে উঠে পড়ে লেগেছে মোদি সরকার। তারই অঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের ৩৯টি শিবিরের একটি তালিকা বিজিবি’র হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ। গত বৃহস্পতিবার শিলংয়ে বিজিবি-বিএসএফের এক যৌথ সম্মেলন শেষ হয়েছে। সেই সম্মেলনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গিদের তালিকাটি তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের হাতে। সীমান্তে চোরাচালানসহ বাংলাদেশে সক্রিয় নানা জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা নিয়ে ঢাকার কাছে আপত্তি জানিয়েছে বিএসএফ।

বিএসএফ কর্মকর্তার কথায়,‘ভারতীয় ভূখণ্ডে নানা অনৈতিক কাজ করতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশের নাগরিকরা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের কাছে আবেদন জানানো হয়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জাল নোটের প্রচলন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএসএফ।

বিএসএফের আইজি সুদেশ কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে জাল নোটের পাচার রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছি আমরা। চারদিনের ওই বৈঠক শেষে বিএসএফ-এর এক বিবৃতিতে হলা হয়েছে, বিজিবি প্রতিনিধি দলের প্রধান লতিফউল হায়দার অভিযোগ শোনার পর শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

পত্রিকাটির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আসামের জঙ্গি সংগঠন এনডিএফবি সংবিজিতপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে চলছে সেনা অভিযান ‘অপরেশন অলআউট’। এতদিন এই অপারেশনে ভুটান সেনার সহায়তা চায়নি নতুন দিল্লি। তবে মিয়ানমারে যখন আসামসহ উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল অপারেশন’ জোরদারভাবে অব্যাহত, ঠিক সেই সময়ে একসঙ্গে ভুটান সেনার সঙ্গে কৌশলগত বোঝাপড়ার মাধ্যমে আসামের ভুটান সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে সংবিজিতপন্থী জঙ্গিদের সাফাই করার অভিযান নতুন মাত্রা লাভ করেছে।

জানাগেছে, অপরাশেন অলআউট শুরুর পর থেকে আলোচনা-বিরোধী এনডিএফবি ক্যাডার ও নেতাদের অধিকাংশই ভুটানের জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এমতাবস্থায় ভারত-ভুটান সীমান্তেও নতুন করে এনডিএফবি’র বিরুদ্ধে জোর অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনী। নতুন দিল্লির আহবানে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ভুটান সরকার।

সুত্রঃ নয়া দিগন্ত