Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা যুদ্ধাপরাধী ছিলেন!

amjad-khanসদ্য প্রয়াত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মেজর জেনারেল আমজাদ খান চৌধুরী (অব.) মারা যাবার পর হঠাৎ করেই সামনে চলে এলো তার ‘যুদ্ধপরাধী’ পরিচয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তোলপাড়।

কর্নেল শাফায়াত জামিল বীরবিক্রমের লেখা ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর’ বইয়ে তার ‘যুদ্ধপরাধী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। জামিলের ওই বইয়ের পাতা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট।

chardike-ad

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রমাণ হিসেবে ওই বইয়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর ক্যান্টনমেন্টের বিএম-২৩ ব্রিগেডের মেজর আমজাদ খান চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন। রংপুরে অবস্থানকালে তিনি হত্যা-ধর্ষণসহ হিন্দুদের ঘরবাড়ি লুট করার কাজেও জড়িত ছিলেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর’ বই থেকে পাওয়া তথ্য মতে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সেনাদের সাথে মিত্র বাহিনীর কাছে আমজাদ খান চৌধুরী আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে যুদ্ধবন্দি পাকিস্তানী সেনা হিসেবে তাকেও ভারত নিয়ে বন্দি শিবিরে আটক রাখা হয়। সিমলা চুক্তির পর পাকিস্তানী সেনা হিসেবে তিনি দেশটিতে ফেরত যান। সেখান থেকে আটকে পড়া চার লাখ বাঙালির সাথে দেশে ফিরে ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে আটকে পড়া সেনা’ পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে মেজর জেনারেল পদোন্নতি পান আমজাদ খান চৌধুরী। পরে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে ব্যবসায় নামেন তিনি। কর্নেল শাফায়াত জামিলের বই থেকে জানা গেছে, ‘৩০ মার্চ ৩য় বেঙ্গলের ব্যাটালিয়ন আডজুটেন্ট সিরাজকে রংপুর ব্রিগেড হেড কোয়ার্টারে একbookটা কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য পাঠানো হয়। তার সঙ্গে ১০/১২ জন সশস্ত্র প্রহরী ছিল। পাকিস্তানিরা পথে তাদের বন্দী করে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সে রাতেই প্রায় সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। দলটির মাত্র একজন সদস্য দৈবক্রমে বেচে যায়।’ ‘পরে সে ৩য় বেঙ্গলের সঙ্গে মিলিত হতে পেরেছিল। উল্লেখ্য, তখন রংপুর ব্রিগেডের গুরুত্বপূর্ণ ব্রিগেড মেজর পদের আসীন ছিলেন একজন বাঙালি মেজর আমজাদ খান চৌধুরী। উল্লেখ, তিনি ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট কুমিল্লার ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন এবং তারই নিয়োজিত সেনা দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের পাহারার দায়িত্বে ছিল। আক্রমণকারীদের প্রতিরোধে এরা সেদিন ব্যর্থ হয়। সব সম্ভবের দেশ এই বাংলাদেশে তিনি পরবর্তীকালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছিলেন’ বলেও শাফয়েত জামিলের ওই বই থেকে জানা গেছে।

বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় ডিউক মেডিকেল হাসপাতালে মারা যান আমজাদ খান চৌধুরী। আমজাদ খান চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার ব্যবসায়ী পরিচয়কে সামনে রেখে গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর পরিবেশন করা হচ্ছে।

আমজাদ খানের সংক্ষিপ্ত জীবনী: আমজাদ খান চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৯ সালের ১০ নভেম্বর। তিনি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান আর্মিতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ রংপুরের পাকি ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর ছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত তিনি চারটি প্রমোশোন পেয়ে মেজর জেনারেল পদে উন্নিত হন এবং সেই রংপুরের ডিভিশনের জিওসি হিসেবে নিয়োগ পান।

book-2১৯৮১ তে তিনি দুর্নীতির দায়ে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত/অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরে যান। ঠিক ওই বছরেই তিনি রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড নামে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/কারখানা স্থাপন করেন। পরে তিনি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী হন। (জীবনী অংশটা ত্রিশঙ্কু মল্লিক-এর ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

তথ্য সুত্রঃ প্রিয়.কম