Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কুয়েতের ‘বাংলা মার্কেট’

bangla-marketমার্কেটের ভেতরে ঢুকেই রীতিমত চক্ষু চড়কগাছ। এ কোথায় এলাম! মনে হবে কল্পনার বাহনে চড়ে বোধহয় মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে চলে এসেছি মাতৃভূমি বাংলাদেশে। ঢাকার কোনো শপিং মলে! মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক! বাংলাদেশি, বাংলা ভাষা। সব মিলিয়ে ‘বাংলা মার্কেট’।

বলছি কুয়েত সিটির মিরকাবের ‘সুক আল ওয়াতিনার’ কথা। যার মানে দাঁড়ায় জাতীয় বিপণি বিতান। কারণ অবশ্যই আছে। এটাই কুয়েতের ইতিহাসে নাম লেখানো প্রথম মার্কেট।

chardike-ad

সবার কাছে পরিচয় ওয়তিনা মার্কেট বা বাংলা মার্কেট। আধুনিক আরও অনেক শপিং মল আর বিপণি বিতানের চাপে আরব ছেড়ে বাংলাদেশিদের ‘দখলে’ এই মার্কেট। আটতলা মার্কেটের প্রথম ও দোতলা নিয়ে চারশ’ দোকান। কী নেই এখানে! মোবাইল, গার্মেন্টস, ল্যাগেজ, জুয়েলারি? সবই মেলে এসব দোকানে। মার্কেটের দু’টি ফ্লোর জুড়েই কেবল বাংলাদেশ!

bangla-marketনিচ তলায় কথা হলো বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ক্রেতার সঙ্গে। চোখে পড়লো সুপার গিফট সেন্টারেরও। ঘড়িসহ যাবতীয় উপহার সামগ্রী বিক্রি হয় দোকানটিতে। ফেনীর দাগনভূঁইয়ার আবু হেনা মোস্তফা কামাল বাবলু পরিচালনা করেন এ দোকান।

তিনি জানান, ‘অতীতে দেশে যাবার আগে প্রবাসীরা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন এই মার্কেটে। প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে ব্যাগ ভর্তি করে দেশে ফিরতেন তারা। দেশে যাচ্ছে এমন কাউকে পেলে তার হাতেও তুলে দিতেন স্বজনদের জন্যে নানা উপহার সামগ্রী। এখন অবশ্য আগের সেই দিন নেই!’

এই বাংলা মার্কেটের মূল বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে-প্রায় প্রতিটি দোকানের সাইনবোর্ডের ভাষাই বাংলা। আরবির রাজত্বে বাংলা ভাষার এই জয় জয়কারে দেশ প্রেমের উদাহরণ দিতেও ভুল করেন না এখানকার ব্যবসায়িরা।

একটি দোকানের সামনে রাখা স্পিকারে ভেসে আসছে বাঙালি লোক সংগীতের সুরের মূচ্ছর্না। খোদ কুয়েতি বা পারস্য উপসাগরীয় দেশের পর্যটকদের কানে বিনামূল্যেই দেশীয় সংস্কৃতি পৌছে দিচ্ছেন প্রবাসীরা।

বেচা-কেনায় ব্যস্ত সবাই। কেউ ঢাকার মতোই ক্রেতাদের নজর কারছেন নানা কায়দায়। কেউ বা ক্রেতাদের গতিবিধিও পর্যবেক্ষণ করছেন রাজধানীর বিভিন্ন বিপণি বিতানের কায়দায়।

bangla-marketসরেজমিনে দেখা গেল, ঢাকার মার্কেটগুলোর মতোই বেশ জমজমাট এখানকার দোকানগুলো। বিশেষ করে এখ‍ানে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে ভিড় উপচে পড়ে এ মার্কেটে।

‘প্রবাসীদের সাপ্তাহিক মিলন মেলার ঠিকানাও এই মার্কেট,’ বলছিলেন বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রিয়মুখ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কর্মব্যস্ত প্রবাস জীবনে অবসরের আড্ডায় মিলিত হতে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকে আসেন এখানে। সবাই যখন এক হয় তখন মিলন মেলায় পরিণত হয়।’

আলাপচারিতায় জানা গেল, প্রবাসের চাকরির অবসরের পুরো সময়টা তিনি ব্যয় করেন কমিউনিটির কল্যাণে। মরুভূমির দেশ কুয়েতে বেড়াতে প্রবাসীদের ভ্রমণ সূচিতে থাকে এই মার্কেট। প্রবাসী মিজানুর রহমান বলেন, শুধু কী তাই। দেশে ফিরে যাবার আগে কুয়েত ভ্রমণের স্মৃতিকে সঙ্গী করতে এই মার্কেট থেকে নানা উপহার সামগ্রী কিনে নেন বাংলাদেশিরা। (বাংলানিউজ)