Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যেখানে আঘাত হানতে পারবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র

North Koreaযুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে কড়া ভাষায় হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় পিয়ংইয়ং এই হুমকি দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, পিয়ংইয়ংয়ের এই হুমকি ফাঁকা আওয়াজ নয়। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আওতায় কেবল ফ্লোরিডা ছাড়া পুরো যুক্তরাষ্ট্রই রয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবাহিনীর স্ট্র্যাট্যাজিক রকেট ফোর্সেস। আর এই বাহিনীর ঘাঁটি হচ্ছে দক্ষিণ পিয়ংগান প্রদেশ। কোরীয় পিপলস আর্মির এই শাখাটির ছয়টি স্থায়ী ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র আছে। এছাড়া এর মোবাইল ট্রাক্টর ইউনিট রয়েছে, যেটি সারাদেশের যে কোনো স্থান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে সক্ষম। আর এই ভ্রাম্যমান ট্রাকগুলোকে প্রতিপক্ষের রাডারের সনাক্ত করা বেশ মুশকিল।

chardike-ad

প্রথমদিকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রের অনুকরণে তৈরি করা হতো। তবে সরকার অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করায় এখন ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি অনেক অগ্রসর।

ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার ভান্ডারে প্রায় ১ হাজার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। তবে এর সিংহভাগই স্বল্পপাল্লার, যেগুলো ৩০ থেকে ৩০০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। দক্ষিণ কোরিয়াকে সামনে রেখেই এগুলো তৈরি করা হয়েছে।

গত দুই বছরে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। এগুলো ছিল স্বল্প থেকে দূরপাল্লার। সম্প্রতি যেসব ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে ৭ হাজার ৪০০ মাইল দূরের বস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। আর এই সক্ষমতা লন্ডনে আঘাত হানার জন্য যথেষ্ট, যা উত্তর কোরিয়া থেকে ৫ হাজার ৩৮০ মাইল দূরে অবস্থিত। একইভাবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালে রয়েছে মস্কো, দিল্লি ও সিডনি। এমনকি উত্তর কোরিয়ার অত্যাধুনিক রকেটগুলো কেবল ফ্লোরিডা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।

২০১৬ সালের জুনে উত্তর কোরিয়া তরল জ্বালানিতে উড়তে সক্ষম সফলভাবে হসং-১০ রকেটের পরীক্ষা চালিয়েছে। এর লক্ষ্যবস্তু ২ হাজার ৫০০ মাইল।বিশ্লেষকদের মতে এটি ২ হাজার ৭০০ পাউন্ড ওজনের পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম।

গত ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৮০০ মাইল দূরের বস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম পুকগুকসং-২ ক্ষেপণাস্ত্রর সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। আর জুলাইয়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছে হসং-১৪ ক্ষেপণাস্ত্র, যেটি ৬ হাজার ২১০ মাইল দূরৈ আঘাত হানতে সক্ষম।

গত বছরের অক্টোবরে ৭ হাজার ৪৫০ মাইল দূর আঘাত হানতে সক্ষম হসং-১৩ আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালানো হয়। এটিও পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম।

পারমাণবিক ওয়ারহেড ছাড়াও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রভান্ডারে সারিন, ভিএক্স গ্যাস ও টাবুনসহ রাসায়নিক অস্ত্রের বিশাল ভান্ডার রয়েছে। তাত্বিকভাবে ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে এগুলো সংযুক্ত করতে আঘাত হানতে পারে উত্তর কোরিয়া।