Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় রান্নাঘর ঢাকায়!

khans-kitchin
খান’স কিচেন রুমে কাজ করছেন কর্মীরা

রাজধানী ঢাকায় তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় রান্নাঘর। আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি। এখানে রান্না হবে লাখো মানুষের খাবার। এ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান হবে তিন হাজার মানুষের। মানুষের হাতের স্পর্শ ছাড়াই এখানে মেশিনে হবে কাজ। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে গড়ে উঠছে লক্ষাধিক মানুষের রান্নাযজ্ঞ খাবার প্রস্তুত প্রতিষ্ঠানটি।

রাজধানীর নতুন বাজারের পূর্ব পাশে বেরাইদ এলাকায় ১৫ বিঘা জমির ওপর বেসরকারি উদ্যোগে রান্নাঘরটি প্রতিষ্ঠা করছেন নারী উদ্যোক্তা আফরোজা খান। তিনি এর নাম দিয়েছেন “খান’স কিচেন”। ইতোমধ্যেই নান্দনিক অবকাঠামো ও বিশ্বের আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে এখানে।

chardike-ad

মানুষের হাতের স্পর্শ ছাড়াই খান’স কিচেনে লাখো মানুষের জন্য রান্না হবে খাবার। মেন্যুতে থাকছে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ ও মাংস। সঙ্গে থাকবে স্যুপ। বাদ যাবে না ডেজার্ট বা মিষ্টান্ন। সময়, সুযোগ ও চাহিদার ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাখা হবে বিশেষ কিছু খাবার। স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু, পুষ্টিকর, জীবাণুমুক্ত ও সতেজ রুচিসম্মত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং টাটকা গরম খাবার সরবরাহ করাই এ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য।

afroja
আফরোজা খান

খান’স কিচেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান জানান, ‘ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল নগরী। যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সাড়ে ৪৪ হাজার লোক বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত কর্মজীবী। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রাজধানীতে অধিকাংশ মানুষ ভোগেন পেটের পীড়ায়। এর অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার। বলতে পারেন, তাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আমাদের এই উদ্যোগ।’

কর্মজীবীদের কাছে খান’স কিচেন ঘরের গরম খাবারের স্বাদের অভাব ঘোচাবে বলে আমরা আশাবাদী এই উদ্যোক্তা। তার ভাষ্য, “বাঁচার জন্য খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু ভেজাল, অস্বাস্থ্যকর আর বেশি দামের কারণে খাবারই মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে রাজধানীর অফিস, আদালত ও ব্যাংকপাড়ার কর্মজীবী মানুষ মধ্যাহ্নভোজ করতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। তাদের কথা ভেবে কম দামে স্বাস্থ্যকর গরম খাবার পৌঁছে দিতেই আধুনিক প্রযুক্তিতে এশিয়ার সবচেয়ে বড় রান্নাঘরটি তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন চলবে লক্ষাধিক মানুষের রান্নাযজ্ঞ। হাতের স্পর্শ ছাড়া মেশিনে হবে কাজ।”

নতুন এ উদ্যোগ প্রসঙ্গে আফরোজা খান বলেন, “সবসময় নতুন কিছু করার ইচ্ছে ছিল। এরই অংশ হিসেবে খান’স কিচেনের ভাবনা এলো মনে। তিন বছর এ বিষয়ের ওপর দেশ-বিদেশে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়েছি। এরপর আমার স্বামী আলী আহম্মদ খানের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি তৈরির উদ্যোগ নিই। আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। শিগগিরই খাবার সরবরাহ শুরু করবো। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শেফ টনি খান প্রতিষ্ঠানটির সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকছেন।’

খান’স কিচেনের নির্বাহী পরিচালক আলিফ খান বলেন, ‘জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করে এশিয়ার বৃহৎ খাবার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গড়েছি আমরা। উৎপাদন পদ্ধতিতে আমরাই প্রথম ব্যবহার করছি বিশ্বে খাবার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের সর্বাধুনিক পদ্ধতি ফোরজি (ফোর্থ জেনারেশন) হাই এফিসিয়েন্সি ক্লাসিফায়ার প্রযুক্তি। এছাড়া আমরা নিশ্চিত করছি স্টিম ইনজেকশন সিস্টেম, অ্যাপেক্সি ফ্লোর এবং ইলেকট্রিক পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব রান্না। এখানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু, পুষ্টিকর, জীবাণুমুক্ত ও সতেজ রুচিসম্মত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং টাটকা গরম খাবার।’

khans-kitchin-foodউদ্যোক্তারা জানিয়েছেন— ডাল, ভাত, সবজি, মাছ বা মাংসের সঙ্গে ডেজার্ট বা মিষ্টান্ন খাবারের মূল্য ধরা হয়েছে ৯৫ টাকা। খান’স কিচেনের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে রাজধানীর যে কোনও স্থানে।

ভোজনরসিকদের সুবিধার্থে খান’স কিচেন ব্যবহার করবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বানানো বাক্স, যা বাইরের আর্দ্রতা থেকে খাবারকে সুরক্ষিত ও টাটকা রাখতে সহায়ক হবে। ফলে খাবার গরম থাকবে ছয় ঘণ্টারও বেশি সময়। সর্বোচ্চ মানের কাঁচামাল, উৎপাদনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, কম্পিউটারাইজড ল্যাবরেটরি, নিজস্ব প্যাকেজিং ইউনিটের আধুনিক ব্যবহার নিশ্চিত করে শতভাগ গুণগত মান বজায় রাখতে চান সংশ্লিষ্টরা। বাংলা ট্রিবিউন