Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভালো চাকরির আশায় সৌদিতে গিয়ে যৌন হয়রানির স্বীকার গৃহবধূ

house-wife-saudiনড়াইলে এক গৃহবধূকে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরব পাঠিয়ে যৌন নিপীড়নসহ পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুঃসহ যন্ত্রণা আর দুঃস্বপ্ন ভরা প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দীর্ঘ ১৩ মাস পর নড়াইল পৌরসভার ওই গৃহবধূ দেশে ফিরতে পারলেও গুরুত্বর অসুস্থার কারণে তাঁকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী হতে হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নিলেও অভিযোগ রয়েছে, দালালকে গ্রেপ্তার করছে না তারা। ফলে বেপরোয়া ওই দালাল ও তার সহযোগীদের অব্যাহত হুমকির মুখে নির্যাতনের শিকার অসহায় পরিবারটির চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে। তবে পুলিশের দাবি, জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

chardike-ad

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভালো চাকরির আশায় দারিদ্রক্লিষ্ট দিনমজুর স্বামীর সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে জীবনের সঞ্চয় ৭০ হাজার টাকা প্রতিবেশী দালাল আনিস মোল্লার হাতে তুলে দিয়ে ১৩ মাস আগে সৌদি আরব পাড়ি দেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু সৌদি আরব পৌঁছেই তাঁর সব স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে যায়। সেখানে দালাল আনিসেরে ভগ্নিপতি আশরাফ তাঁকে সারাদিন বাসাবাড়িতে কাজ করিয়ে রাতে যৌনপল্লীতে পাঠিয়ে যৌনাচারে বাধ্য করতেন।

এভাবে দিনের পর দিন বিনা বেতনে অভুক্ত অবস্থায় নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় তাঁকে। একপর্যায়ে গৃহবধূর দিনমজুর স্বামী ঘটনা জানতে পেরে দিশেহারা হয়ে স্ত্রীকে ফেরাতে দালাল আনিসের কাছে ছোটেন। এ সুযোগ কাজ লাগান আনিস। তিনি ওই গৃহবধূকে ফিরিয়ে আনতে তার হতদরিদ্র পরিবারটির সম্বল একখণ্ড জমি বিক্রি ও ধারদেনার মোট এক লাখ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে দিনের পর দিন ঘোরাতে থাকেন তাদের। এ অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় সৌদি সরকারের উদ্যোগে ওই গৃহবধূ অবশেষে গত ২ ডিসেম্বর দেশে ফিরলে স্বজনরা ৪ ডিসেম্বর তাঁকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সম্ভ্রম, সহায়- সম্বলহারা নির্যাতিতা নিজের ওপর ঘটে যাওয়া নির্মমতার বর্ণনা দেন।

গৃহবধূর স্বামী বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে তাঁর পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল মেডিকেল অফিসার ডা. আ ফ ম মুশিউর রহমান বলেন, ভুক্তভোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুবই নাজুক।

নড়াইল সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিহির পাল বলেন, জড়িতদের আটক করতে অভিযান চলছে।

নির্যাতিতার স্বামীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আনিস ও তাঁর সৌদি প্রবাসী ভগ্নিপতি আশরাফের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে গত ১০ ডিসেম্বর সদর থানায় মামলা হয়েছে।