Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঘুরে আসুন কোরিয়া যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত শতাব্দীর প্রাচীন হোয়াসং দুর্গ

hwaesongজোসন সাম্রাজ্যের (১৩৯২-১৯১০) শেষ ভাগের একটি অনন্য সাধারণ স্থাপনা হোয়াসং দুর্গ। বর্তমান দক্ষিণ কোরিয়ার খিওংগিদো প্রদেশের সুওন শহরের এক সময়কার প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার হওয়া দুর্গটি নির্মাণ করা হয় ১৭৯৪-১৭৯৬ সালের মধ্যে। রাজা জিওংজোর পিতৃভক্তির এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি স্থাপনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সুওন শহরকে একটি স্বনির্ভর আদর্শ নগরীতে পরিণত করা।
নজিরবিহীন সামরিক সুবিধাসম্বলিত হোয়াসংয়ের প্রাচীর লম্বায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম কোণে রয়েছে চারটি প্রধান ফটক। রয়েছে সপ্ত ধনুক আকৃতির সুমুন গেট যার ফাঁক গলে সুওনের প্রধান নদী সুওনচেওন দুর্গের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সুমুন গেটের উপরে রয়েছে হাংমুন নামের একটি প্যাভিলিয়ন।

হোয়াসং দুর্গের স্থপতি জং ইয়াক ইয়ং, যিনি পরবর্তীতে কোরিয়ায় সিলহাক (বাস্তবমুখী শিক্ষা) আন্দোলনের নেতা হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেন। কোরিয়া ও চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের দুর্গের শৈল্পিক নকশার সাথে বিজ্ঞানের প্রয়োগে ইয়ং এ দুর্গের নির্মাণশৈলীতে যোগ করেন ভিন্ন মাত্রা। বিশেষ ধরনের ইটে নির্মিত প্রাচীরগুলোতে এমন আকারের ফোঁকর রাখা হয়েছিল যেন আক্রান্ত হলে আক্রমণকারীদের উপর এসব ফাঁক গলে তীর, বর্শা ও গুলি বর্ষণ করা যায়।

chardike-ad

hwaesong-frontসোয়া দু’শ বছরের পুরোনো হাসংয়ের সেই রূপ এখন আর নেই। সময়ে সময়ে আক্রমণের শিকার হয়ে হোয়াসং দিনকে দিন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। ১৯৫০ সালের ২৫ জুন (কোরিয়া যুদ্ধ শুরুর দিন) এটি সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকেই ধারনা করেছিলেন হোয়াসংকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা ছাড়া বুঝি আর উপায় নেই। কিন্তু ১৯৭৫-৭৯ সালে তৎকালীন সরকার এটিকে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এবং হোয়াসংয়ের রূপ-যৌবনের অনেকটাই ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।

১৯৬১ সালে হাসং ঐতিহাসিক স্থাপনার স্বীকৃতি পায়। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো একে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান’ (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) ঘোষণা করে।

এক নজরে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলীঃ
খোলা থাকার সময়ঃ
গ্রীষ্মকালঃ সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা।
শীতকালঃ সকাল ৯ টা থেকে বিকেল পাঁচটা।

প্রবেশ মূল্যঃ
প্রাপ্তবয়স্কঃ ১০০০ উওন, কিশোর ৭০০ উওন, শিশু ৫০০ উওন।
(ন্যূনতম ৩০ জনের গ্রুপ হলে) প্রাপ্তবয়স্কঃ ৭০০ উওন, কিশোরঃ ৫০০ উওন, শিশু ৩০০ উওন।

যেভাবে যাবেনঃ
হোয়াসংয়ের অবস্থান সিউল থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে। সুওন (수원역) স্টেশন (সিউল সাবওয়ে লাইন ১) থেকে ২, ৭, ৭-২, ৮ অথবা ১৩ নম্বর বাসে উঠে পড়ুন। নামতে হবে জোংনো সাগরি (종로 4거리) তে। দুর্গ এখান থেকে হাঁটা পথে পাঁচ মিনিট।

লিখেছেনঃ শাহেদ মাহমুদ, সম্পাদনা করেছেনঃ মো. মহিবুল্লাহ