দীর্ঘ চারমাস জীবনের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা গেলেন দুর্বৃত্তের হামলায় আহত নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম। গত মঙ্গলবার সকালে নিউ ইয়র্ক সিটির সেন্ট জোন্স হাসপাতালে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিজ বাসায় ফেরার পথে নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকার রাস্তায় দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হন শাহ আলম (৭২)। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার জেলার দৌলতপুর উপজেলার নজিবপুরে।
জানা যায়, ঘটনার দিন দুর্বৃত্তরা শাহ আলমের সেল ফোন কেড়ে নিয়ে দৌড় দিলে তিনি একজনকে আটক করার চেষ্টা করেন। অপর আরেক দুর্বৃত্ত তাঁকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে প্রচন্ড আঘাত করেন। ফলে আঘাত লেগে ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ঘটনাটি দেখে একজন পথিক পুলিশকে ফোন করলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে জ্যামাইকা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে অন্যান্য হাসপাতালের পর শেষে সেন্ট জোন্স হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর স্থানীয় পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে শাইকুয়াল কিম্বেল ও জলিল স্টিলি নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। দুই আসামীই বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। শাহ আলমের মৃত্যু সংবাদ জানার পরই আটক দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নিউ ইয়র্কে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে।
গত বুধবার জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে তাঁর জানাজার পরই রাষ্ট্রীয় মর্যাদার অংশ হিসেবে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের কফিন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় মুড়িয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করেন। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম বাংলাদেশের অহংকারী নাগরিকের একজন ছিলেন। রাষ্ট্রীয় খরচে মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের তাঁর লাশ বাংলাদেশে পাঠানো হবে বলে উল্লেখ করেছেন কন্সাল জেনারেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই তিনি এ ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান।
এ সময় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের রাশেদ আহমেদ, আবুল বাশার চুন্নু, রেজাউল বারী, লাবলু আনসার, মনির হোসেন ও আবুল বাতেন উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের লাশ জেএফকে এয়ারপোর্টে নেয়ার আগে ফিউনারেল হোমের খরচ বহন করেছে কুষ্টিয়া জেলা সমিতি। ঢাকা থেকে কফিন নেয়া হবে শাহ আলমের গ্রামের বাড়িতে। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ