একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন নিহত আইনজবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক। সে কারণে দীপা ভৌমিক নিজের এ কষ্টের কথা বলতেন সহকর্মী কামরুল ইসলাম জাফরির কাছে। কথা বলতে বলতেই এক সময় তারা প্রেমাসক্ত হয়ে পড়েন।
স্বামী রথীশকে হত্যার কথা স্বীকার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এমন দাবি করেছেন দীপা।
তিনি বলেন, রথীশ একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত ছিল। তাকে অবজ্ঞা-অসম্মান করত। শুধু তাই নয়, তার বিবাহিত জীবন ছিল অশান্তিতে ভরা। পরস্পরকে কেউ বিশ্বাস করত না। তাকে অবিশ্বাস করায় সেও স্বামীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেনি। তাকে প্রায় মারধর করা হতো। এ ব্যাপারে বাড়িতে স্বজনদের নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়। এ কারণে তাদের মধ্যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এসব কষ্টের কথা দীপা তার সহকর্মী জাফরিকে জানাত। এ নিয়ে আলোচনা করায় তারা প্রেমাসক্ত হয়ে পড়ে। পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
রংপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমিন মুক্তার আদালতে দেয়া ১২ পাতার জবানবন্দিতে পারিবারিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন দীপা।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ রাতে ১০টি ঘুমের বড়ি দিয়ে আইনজীবী রথীশকে অচেতন করে প্রেমিক জাফরির সহযোগিতায় হত্যা করেন দীপা।
তিনি পুলিশকে জানান, রথীশকে খুন করার জন্য প্রেমিক জাফরি দু’ঘণ্টা আগে থেকেই তার শোয়ার ঘরের পেছনের দরজার কাছে ঘরের বাইরে অবস্থান নিয়েছিল। ঘুমের বড়ি খাওয়ানোর ফলে আইনজীবী রথীশ তার মেয়েসহ ঘুমে অচতেন হয়ে পড়েন। পরে রথীশের গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
রাতভর লাশ ঘরে রেখে ৩১ মার্চ ভোর ৫টার দিকে বাড়ি থেকে লাশ বহনের জন্য রিকশা-ভ্যান আনতে যান প্রেমিক জাফরি। সকাল সাড়ে ৯টায় একটি মাঝারি ধরনের স্টিলের আলমারির ভেতরে লাশ ঢুকিয়ে সেটি ভ্যান গাড়িতে তুলে তাজহাট মোল্লাপাড়ায় নিয়ে যান জাফরি। সেখানে আগে থেকেই খুঁড়ে রাখা গর্তে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয় রথীশের লাশ। মাটি খুঁড়ে গর্ত করা ও মাটিচাপা দিতে দুই ছাত্রকে ব্যবহার করে ঘাতক কামরুল ও দীপা। এজন্য তাদের ৩০০ টাকা মজুরি দেয়া হয়।






































