একদিকে ধরপাকড় অন্যদিকে চলছে নিবন্ধন। মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের সামনে হাজার হাজার অভিবাসী ভিড় করছেন নিবন্ধিত হওয়ার জন্য। ৩০ জুন নিবন্ধনের শেষ দিনে অবৈধ অভিবাসী এবং নিয়োগকারী মালিকরা অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে নিবন্ধনের জন্য নাম লেখাচ্ছেন।
সকাল ৮টা থেকে অভিবাসীদের উপস্থিতি জনস্রোতে রূপ নেয়। রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট ও রেলা কর্তৃপক্ষকে। তারপরও ইমিগ্রেশন বিভাগের ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করতে দেখা গেছে।
আজ রাত ১২টা পর্যন্ত বৈধকরণ প্রক্রিয়া চলবে বলে জানান ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের পরিচালক দাতো সেরি মোস্তাফার আলী। নিবন্ধন প্রক্রিয়া চললেও গত এক সপ্তাহে মালয়েশিয়ায় বিশেষ অভিযানে ৮শ বাংলাদেশিসহ ৩ হাজার অবৈধ অভিবাসী আটক করেছে অভিবাসন বিভাগ।
ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের ডাকে সাড়া দিয়ে ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়ে আসছিল। এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯২ জন কর্মী বৈধকরণ প্রকল্পে নিবন্ধিত হয়েছে।
মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সংস্থার জরিপে জানা গেছে, অবৈধভাবে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখের বেশি। তবে সঠিক সংখ্যা কত তা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। অবৈধ শ্রমিকদের সংখ্যা বেশিরভাগ ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশ।
আজ ৩০ জুন রাত ১২টায় অবৈধদের বৈধ হওয়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হবে মেগা থ্রি অভিযান। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযান মেগা-থ্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে স্পেশাল বাহিনী। যার নেতৃত্বে থাকবে ইমিগ্রেশন, পুলিশ, রেলা ও স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা।
সম্মিলিত এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে মেগা থ্রি। বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের বাসস্থান, কাজের জায়গা ও বিদেশি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরাল এলাকাগুলো। আরও থাকবে বিভিন্ন কৌশল যার কারণে অবৈধদের কাজ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।
এদিকে প্রবাসীদের একটি অংশ অভিযোগ করে আসছেন, পাসপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় অনেকেই সরকারের বৈধ হওয়ার সুযোগটি কাজে লাগাতে পারছেন না। পাসপোর্ট না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন অনেকে। মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে বিভিন্ন আক্রমণমূলক কমেন্ট করে তাদের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. সায়েদুল ইসলাম জানান, রি-হিয়ারিং কর্মসূচিকে সফল করতে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পাশাপাশি ছুটির দিনেও মালয়েশিয়ার প্রত্যন্ত প্রদেশে দূতাবাসের কর্মকর্তারা আমাদের কর্মীদের সেবা দিয়েছেন। শ্রমিকদের সচেতন করতে প্রচারপত্র বিলি করা হয়। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা হয়। কমিউনিটি সভা করে কর্মীদেরকে সচেতন, অবহিতকরণ ও উদ্বুদ্ধ করা হয়।
নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভাসমূহে তাদের আওতাধীন সকল অবৈধ কর্মীদের বৈধতা প্রদানের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়। প্রশ্নের জবাবে সায়েদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর মালয়েশিয়া সরকার সময় দিয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে হাই কমিশনার মুহা. শহীদুল ইসলামের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এবং ইমিগ্রেশনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এতদিন সময় বাড়ানো হয়েছিল।