হাইভোল্টেজ ম্যাচ। মাশরাফি বিন মর্তুজা বনাম সাকিব আল হাসানের লড়াই। দুই অধিনায়কের এই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন সাকিব। মাশরাফির রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেট আর ২০ বল হাতে রেখেই হারিয়ে দিয়েছে তার দল ঢাকা ডায়নামাইটস, নাম লিখিয়েছে ফাইনালে। আর তাতেই বিদায় হয়ে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুরের।
ফাইনালে উঠার ম্যাচে ঢাকার সামনে লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না, ১৪৩ রানের। তবে তাদের শুরুটা ছিল অস্বস্তিতে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বল হাতে নিয়ে উপুল থারাঙ্গাকে (৪) সাজঘর দেখিয়ে দেন মাশরাফি। এরপর ঝড় তুলতে যাওয়া সুনিল নারিন (৮ বলে ১৪) ফিরেন নাজমুল অপুর শিকার হয়ে। ২ উইকেট হারালেও ৪ ওভারেই তখন ৪১ রান উঠে গেছে ঢাকার।
মাঝের সময়টায় দলকে ভরসা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান আর রনি তালুকদার। ২০ বলে ২৩ করে সাকিব দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হন, বেনি হাওয়েলের বলটা গায়ে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয় ঢাকা অধিনায়কের।
এরপর একাদশতম ওভারে এসে কাইরন পোলার্ডকে (৮ বলে ১৪) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান মাশরাফি। ওই ওভারেরই শেষ বলে দুর্ভাগ্যের শিকার ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলা রনি তালুকদার। নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে তিনি আউট হন ২৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করে।
৯৭ রানে ৫ উইকেট হারানো ঢাকাকে এরপর টেনে নেয়ার দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নেন আন্দ্রে রাসেল। নাজমুল অপুর ১৭তম ওভারে টানা তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার। মাত্র ১৯ বলে ৫ ছক্কায় ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
এর আগে ঢাকার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতে ১৪২ রানেই গুটিয়ে যায় রংপুর রাইডার্সের ইনিংস। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চমক রংপুর রাইডার্সের। ওপেনিংয়ে ক্রিস গেইলের সঙ্গে চলে আসেন এবারের বিপিএলে এক ম্যাচও না খেলা নাদিফ চৌধুরী। যে চমকের জন্য নাদিফকে ওপেনিংয়ে আনা, সেটিতে তিনি সফলই বলতে হবে।
মাত্র ১২ বলে ২ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ২৭ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে শুভাগতহোমের শিকার হন নাদিফ। ওই ওভারেই শুভাগতকে টানা তিন বলে তিনটি ছক্কা মেরেছিলেন মানিকগঞ্জের এই ক্রিকেটার।
পরের ওভারে জোড়া ধাক্কা রুবেল হোসেনের। ওভারের প্রথম বলে তিনি তুলে নেন খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসতে থাকা গেইলকে। ১৩ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব। পরের বলে ধারাবাহিকতার প্রতিমূর্তি রাইলি রুশোকে (০) পোলার্ডের ক্যাচ বানান রুবেল। ৪২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছে রংপুর।
চতুর্থ উইকেটে রবি বোপারাকে নিয়ে ৬৪ রানের জুটিতে সে বিপদ সামলে উঠেন মোহাম্মদ মিঠুন। কাজী অনিকের দুর্দান্ত সুইংয়ে উইকেটরক্ষক সোহানের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ২৭ বলে ২টি করে চার ছক্কায় মিঠুন খেলেন ৩৮ রানের এক ইনিংস।
এরপর বেনি হাওয়েল (৩), মাশরাফি (০), নাহিদুল ইসলাম (৪), ফরহাদ রেজারা (২) দলের জন্য কিছু করতে পারেননি। একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন রবি বোপারা। ইনিংসের তিন বল বাকি থাকতে তিনি আউট হন ৪৯ রানে (৪৩ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায়), সেখানেই থামে রংপুর। ঢাকার পক্ষে সবচেয়ে সফল ছিলেন রুবেল হোসেন। ২৩ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন তিনি। ২টি করে উইকেট নেন কাজী অনিক আর আন্দ্রে রাসেল।